ভবেরচর গণহত্যা, মুন্সিগঞ্জ
স্বাধীনতা সংগ্রামের যুদ্ধময় দিনগুলোতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় তৎকালীন মুন্সিগঞ্জ মহকুমায়ও পাক সেনাবাহিনী তাদের ঘাঁটি স্থাপন করে নিরীহ নিরপরাধ মানুষের ওপর অযথা হয়রানি, নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, অগ্নিসংযোগের মত নানা কর্মকাণ্ড শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় জেলার গজারিয়া থানায় ৬ ডিসেম্বর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভবেরচর কাঠের ব্রিজসংলগ্ন স্থানে ১০ জন কিশোরকে হত্যা করে। মুক্তিবাহিনী গ্রামবাসীকে ভবেরচর কাঠের ব্রিজ ভাঙার নির্দেশ দেয়। কারণ পাকবাহিনী এই ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করে বিভিন্ন জায়গায় হামলা করত। ব্রিজ ভাঙার সময় মুক্তিযোদ্ধারা আলীপুর ব্রিজ ও মধ্য বাউসিয়া ব্রিজের কাছে অবস্থান নেয়। ব্রিজ অর্ধেক ভাঙা শেষ হলে আলীপুরের দিক থেকে পাকিস্তানি সেনাদের একটি জিপ আসে। আর্মির জিপ দেখে ব্রিজ ভাঙা বন্ধ করে বয়সে বড়রা পালাতে সক্ষম হলেও ১০ জন কিশোর পালাতে পারেনি, তারা নিরাপত্তা ও প্রাণ বাঁচাতে ভবেরচর কবরস্থানে গিয়ে কবরের উপর আশ্রয় নেয়। কিন্তু নিষ্ঠুর পাকসেনারা কবরস্থানেই ১০ কিশোরকে বেয়নেট চার্জ করে হত্যা করে। এই ১০ জন কিশোর শহীদের মধ্যে ভবেরচরের ৮ জন আলীপুরার ১ জন ও পৈন্ধারপার গ্রামের ১ জন ছিল।
[৮৮] হাসিনা আহমেদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত