ভবানী ভবন নির্যাতন কেন্দ্ৰ, নওগাঁ
২১ এপ্রিল নাটোর থেকে এসে নওগাঁর দখল নেয় পাকবাহিনী। পরবর্তীতে নওগাঁর প্রতিটি রণাঙ্গনে পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজিত হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাধারণ মানুষজনের ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে। নওগাঁ শান্তি কমিটি মুক্তিযুদ্ধ সমর্থকদের তালিকা করত। কাকে হত্যা করা হবে সে সম্পর্কে রায় দিত। নিম্নপদস্থ পাঞ্জাবি অফিসাররা নির্বিচারে যুবক-যুবতীদের ধরে আনত। যুবকদের হত্যা করা হতো আর মেয়েদের ওপর চালানো হতো পাশবিক নির্যাতন। নওগাঁ সিটন সেতুর পূর্বাংশে পরানগাঁও সেতুসংলগ্ন ভবানী ভবন ছিল পাকবাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্র। যুবকদের এখানে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে যমুনা নদীতে ছুড়ে ফেলা হতো। পরাণগাঁও পাটমালা স্কুলে আবিষ্কৃত বধ্যভূমিতে অগণিত মহিলার লাশ পড়ে ছিল। কেবল ১৪ থেকে ৩০-৩৫ বছরের মহিলাদের লাশ ছিল সেখানে। এখানে একটা পানির কুয়ো ছিল, তার পাশের ঘরেই মেয়েদের ওপর অত্যাচার করে জবাই করে অথবা জীবন্ত অবস্থায় হাত-পা বেঁধে কুয়োর মধ্যে ফেলে দেয়া হতো। মরদুলা উচ্চবিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে রউফ মিয়ার বাগান ও পরানগাঁও ডাক্তার হাসান আলীর বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব কোণের পরিত্যক্ত জমিতে বহু লাশ পাওয়া যায়।
[৩৪] ডা. এম.এ. হাসান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত