ব্রাহ্মণবাজার গণহত্যা, সিলেট
জেলা সদর থেকে কুলাউড়া প্রবেশ করতে পাকবাহিনীকে এই ব্রাহ্মণবাজার হয়ে যেতে হতো। এটা একটা বড় বাজার এবং ব্রাহ্মণবাজার একটি ইউনিয়নও। ৭ মে প্রথম কুলাউড়া যাওয়ার পথে চাতলগাঁওয়ে পাকবাহিনী যে গণহত্যা সংঘটিত করে, তাতে শহীদ হন ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের হিঙ্গাজিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম। পরে এই শহীদের মৃতদেহ গ্রামবাসী নিজেদের উদ্যোগে তাঁর বাড়িতে এনে দাফন করেন।
এর কয়েক দিন পর পাকবাহিনী আবার প্রবেশ করে হিঙ্গাজিয়া গ্রামে। বাড়ি বাড়ি ঢুকে তারা লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন এবং গণহত্যা চালায়। হিঙ্গাজিয়া ডাকঘরের পোস্টমাস্টারকে তাঁর বাড়িতে হত্যা করে বুলেটের পর বুলেট ছুড়ে। এরপর তারা অগ্রসর হয় অন্য বাড়ির দিকে। সেখানে হত্যা করে ননী দেব ও প্রণয় কুমার দেবকে। এঁদের প্রত্যেকের বাড়িঘর লুণ্ঠিত হয়। শুধু তাই নয়, পুড়িয়ে ছাই ভস্মে পরিণত করা হয় তাদের বাড়িঘরগুলো। পাকবাহিনী এখানেই থেমে থাকে না। তারা হত্যা করে উত্তর হিঙ্গাজিয়ার নিয়ামত আলীকে। মনোহরপুর গ্রামের মনছর আলী, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের বাড়ি আক্রমণ করে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয় নির্মমভাবে। শারীরিক নির্যাতন ও ধরে নিয়ে যেয়ে হত্যা করে বহু লোককে। নিয়ে যাওয়ার পর আর তাঁর সংবাদ জানা যায়নি এমনও অনেক লোক রয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার বৃন্দাবনপুর গ্রামের সত্যব্রত দাশ এবং নৃপেশ রঞ্জন দাশ হিঙ্গাজিয়ায় বেড়াতে এলে তাঁদেরকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে পাকবাহিনী।
[৪৬] তাজুল মোহাম্মদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত