You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.27 | বাসুদেবশ্রী গণহত্যা | সিলেট - সংগ্রামের নোটবুক

বাসুদেবশ্রী গণহত্যা, সিলেট

২৭ এপ্রিল পাকবাহিনীর সাথে কামালপুরে প্রচণ্ড যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মুক্তিসেনারা কৌশলগত কারণে পশ্চাৎপসরণ করে। এদিকে পাকবাহিনী তাদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে শুরু করে নিরস্ত্র মানুষজনের ওপর। কিছু মুখচেনা দালাল ব্যতীত যাঁকেই তারা সামনে পায়, তাঁকেই তারা হত্যা করে। কামালপুর থেকে কনকপুর পর্যন্ত দীর্ঘ দু মাইল পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশের ঘরবাড়ি, গাছপালা ইত্যাদি পর্যন্ত অগ্নিসংযোগে ভস্মীভূত করে দেয় তারা। লুট করে নিয়ে যায় অর্থকড়ি ও স্বর্ণালঙ্কারসহ যাবতীয় মূল্যবান দ্রব্য। শুধু পাকবাহিনীর সদস্যরাই নয়, তাদের সহযোগী এ দেশীয় সহযোগী দোসররাও গ্রামবাসীর সহায় সম্পদ প্রায় সমভাবে লুটপাট করে।
পাকবাহিনীর আগমনকালে কাজির বাজারের রাজেন্দ্রনাথ কীর্তনিয়া পায়ে হেঁটে রাস্তা অতিক্রম করছিলেন। জল্লাদ বাহিনীর সদস্যরা চড়াও হয়ে তাঁকে সেখান থেকেই ধরে নিয়ে যায়। কোনো বাক্যব্যয় না করে তারা রাজেন্দ্রের হাত- পা বেঁধে মনু নদীর গভীর জলে নিক্ষেপ করে। বাসুদেবশ্রী (নানকার) গ্রামের পাশ দিয়েই যাবার পথে ওই গ্রামের এক সাধারণ কৃষক মাঠে হাল চাষ করছিলেন। ছেলেসহ লাঙল-জোয়ালসহ বাড়ির দিকে রওয়ানা হয়েছেন মাত্র কিন্তু বাড়ি ফেরা হয়নি পিতা-পুত্র কারোরই। এর আগেই দ্রুত ধাবমান খানসেনাদের হাতের আগ্নেয়াস্ত্র গর্জে ওঠে। ঢলে পড়েন তারা। তারপর তিনটি শবদেহে বুটের কয়েকটি লাথি বসিয়ে দিয়ে পাক জল্লাদরা চেপে বসল তাদের সামরিক যানে।
[৪৬] তাজুল মোহাম্মদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত