You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাগবাটি গণহত্যা ও বধ্যভূমি, পাবনা

পাবনা জেলার ঈশ্বরদী অঞ্চলের একটি গ্রাম বাগবাটি। ‘৭১-এর বাগবাটি গ্রামকে নিরাপদ ভেবে পাকবাহিনীর আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য বগুড়া, শেরপুর, চান্দাইকোনা এবং রায়গঞ্জ থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ এখানে আশ্রয় নেয়। ৩১ মে রাতের শেষ প্রহরে পাক আর্মি তাদের এদেশীয় দোসরদের সহায়তায় এ গ্রামে প্রবেশ করে। সেদিন ছিল মঙ্গলবার, বাগবাটি ইউনিয়ন পরিষদ অফিস থেকে প্রথমে গুলির শব্দ শোনা যায়। ঘুমন্ত মানুষের ওপর শুরু হয় নির্বিচারে গুলিবর্ষণ, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ আর নারী নির্যাতন। মানুষের চিৎকার, ছোটাছুটি আহাজারিতে এক প্রলয়ংকারীর অবস্থার সৃষ্টি হয়। এখানে সেদিন ৮০ জনকে হত্যা করে পুঁতে ফেলা হয়। এ গ্রামেরই পরেশচন্দ্র (৫০) জানান, তার বাবা হরিপদ, কাকা শ্যামাপদ, ঠাকুরদা কালীপদ দত্ত ও পিসেমশাই তারাপদ দত্তকে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে পাক আর্মিরা। প্রভাতচন্দ্র তাঁর বাবাকে হারিয়েছে এ গণহত্যায়। তিনি আরও জানান, বাগবাটি গ্রামের সুবলচন্দ্র পালের পনেরো জন আত্মীয়কে সেদিন পাক আর্মিরা গুলি করে হত্যা করে। তাঁদের মধ্যে ৫ জনের লাশ তিনি নিজের হাতে কুয়োর মধ্যে ফেলেন। হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা এরকম আরও অনেককে সেদিন নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, যাদের আত্মীয়স্বজন সে দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে আজও বেঁচে আছেন।
[৩৪] দিলরুবা বেগম

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!