বাউরবাগ গ্রাম গণহত্যা, মৌলভীবাজার
শেরপুর ও সিলেট যুদ্ধের পর আবার পাকিস্তানি সৈন্যরা আসে মৌলভীবাজারে ক্যাম্প স্থাপন করে শহরে। হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়ে চলে সর্বত্র। জামায়াত ও মুসলিম লীগের পাষণ্ডরা পাকবাহিনীর যাবতীয় অপরাধকর্মে সহায়তা করতে থাকে। তাদেরই পরামর্শে হায়েনারা আক্রমণ করে বসে মৌলভীবাজার সদর থানার বাউরবাগ গ্রামে। সেদিন ছিল ১ মে। পাকবাহিনীর আগমন সংবাদ পেয়ে গ্রামের নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই পালিয়ে যান নিরাপদ আশ্রয়ে। কিন্তু যাঁরা পালাতে পারেননি, তাঁদের সবাইকে প্রাণ দিতে হয় পশুদের হাতে। হানাদার বাহিনী এখানে হত্যা করে বৃদ্ধ বোবা রমণচন্দ্র গুপ্তকেI
তারপর হায়েনাদের শিকার হন সতু মালাকার। তাঁকেও প্রাণ দিতে হয় পাকিস্তানি সৈন্যদের নিক্ষিপ্ত বুলেটে; কিন্তু তিনি একাই নন। আরো পাঁচজনকে। নিয়ে যাওয়া হয় ভোজবরে। সেখানে সারিতে দাঁড় করিয়ে একটি মাত্র বুলেটে তাদের প্রাণ সংহার করে পাকবাহিনী।
ততক্ষণে বাউরবাগ, ভোজবল ও চন্দপুরের সমস্ত লোকজন পালিয়ে যায়। ফলে আর কাউকে খুঁজে পায়নি পাকবাহিনী। এখানেও লুটপাট করেছে তারা। আগুন দিয়েছে বাড়িঘরে। তারপর হত্যা ও ধ্বংসের থাবা মেলে ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য গ্রামে। তাদের এ দেশী দালালরা পথ দেখিয়ে নিয়ে যায় এসব গ্রামে।
[৪৬] তাজুল মোহাম্মদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত