বটিনা গণহত্যা, ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার উত্তর-দক্ষিণে বটিনা গ্রামের ফাড়াবাড়ি হাটের কাছে আবদুর রশিদ মহাবিদ্যালয়ের পেছনে শশধর বর্মণ (এলাকায় বাঙালি ডাক্তার বলে পরিচিত) ছিলেন এক গ্রাম ডাক্তার। ‘৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়িঘর ফেলে ভারতে চলে যান। তাঁর বাড়িতে ছিল একটি মাটির কূপ।
‘৭১-এর ১৫ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও শহর পাকবাহিনী দখল করে। শহরের কাপড় ব্যবসায়ী শেখ শহর আলী, যিনি মুক্তিযুদ্ধে যাবার জন্য রাইফেল প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ও মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার সরবরাহ করতেন, তাঁর পরিবারের সদস্যদের ও কিছুসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা সঙ্গে নিয়ে আশ্রয় নেন। তাঁদের আশ্রয়ের এই সংবাদটি সালন্দর ইউনিয়নের শান্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক পাকহানাদারের কাছে পৌঁছে দেয়; এরপর এক ট্রাক পাকহানাদার (প্রায় ৫০ জন) ‘৭১-এর ১৬ মে দুপুরে শশধর বর্মণের বাড়িতে ঘেরাও করে ফেলে। ঐ বাড়িতে আশ্রিত ঠাকুরগাঁও শহরের ৩৬ জন মুক্তিযোদ্ধা ও গ্রামবাসীকে লাইনে দাঁড় করিয়ে পাক সৈন্যরা এক এক করে গুলি করে হত্যা করে। সবরাতু মোহাম্মদকে বাঁচিয়ে রেখে হানাদারের দল তাঁকে দিয়ে লাশগুলো ঐ কূপে ফেলে দেয়। এরপর তাঁকেও গুলি করে হত্যা করে।
[২৫৮] সংকলন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত