বরইতলা গণহত্যা, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর থানা এলাকায় পাকসেনারা ‘৭১-এ ক্যাম্প করে। কাজীপুর এবং সিরাজগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে বাঙালিদের এখানে ধরে এনে ৫-৭ জন করে হত্যা করত। সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে এ থানার বরইতলা গ্রামে। গাজী আবদুস সালাম (৪৫) এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা এ গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে এ সংবাদ রাজাকারদের কাছে পেয়ে নভেম্বর মাসে পাকসেনারা পুরো বরইতলা গ্রাম ঘিরে ফেলে। সে সময় তিনি এ গ্রামেই ছিলেন। এদিকে মুক্তিযোদ্ধারা বিষয়টি জানতে পেরে লুৎফর রহমান দুদুর নেতৃত্বে বিভিন্ন দিক থেকে পাকসেনাদের ওপর পাল্টা আক্রমণ করে। এ অবস্থায় পাক আর্মিরা পালিয়ে যাবার সময় বরইতলা মসজিদে ঢুকে মুসল্লিদের মারধর করে গুলি করে হত্যা করে। তখন মসজিদে ২০-২৫ জন মুসল্লি ছিলেন। রোজার মাস হওয়ায় মুসল্লিরা ‘এতেকাফে’ বসেছিলেন। পরবর্তীতে পাকসেনারা পুনরায় ফিরে এসে পুরো বরইতলা গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এতে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়। ঐদিন তারা দুজন মুক্তিযোদ্ধাসহ ২০০ জন লোককে গুলি করে হত্যা করে। এদের মধ্যে দুজন মুক্তিযোদ্ধা ও একজন রাজাকার ছিল। মুক্তিযোদ্ধা দুজনের নাম ছিল রবিলাল ও আব্দুস সামাদ।
[৩৪] দিলরুবা বেগম
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত