You dont have javascript enabled! Please enable it!

ফরিদপুরের কিছু হত্যাকাণ্ড, ফরিদপুর

সারদা সুন্দরী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, প্রথিতযশা সমাজসেবী নিঃসন্তান চন্দ্ৰকান্ত বাবুকে গোয়ালচামট শাহ ছাহেবের বাড়িতে গুলি করে হত্যা করে।
বিহারি রাজাকাররা ফরিদপুরের কমলা সাহার পুত্র বৈদ্যনাথ সাহা, কটিলাল সাহার পুত্র প্রমোদ সাহা (ভোম্বল) ধরে গোয়ালচামট ময়লাগাড়িতে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, ফরিদপুর সাইনোফোনের মালিক সুখেন্দু কুমার রায়কে বোয়ালমারী থানার ধোপাডাঙ্গায় হত্যা করা হয়। কৃষ্ণা রায় ও শিপ্রা রায় নামক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া দুই কন্যার সামনেই ঘাতকের বুলেট সুখেন্দু বাবুর জীবনের স্পন্দন স্তব্ধ করে দেয় ঘাতক রাজাকার বাহিনী। সেই দৃশ্য আজও শিপ্রা রায়কে ক্ষতবিক্ষত করে। দিনটি ছিল ২০ মে। “আমরা ধোপাডাঙ্গা চাঁদপুর গৌরচন্দ্র সাহার বাড়িতে অবস্থান করছিলাম। দিনের বেলার ঘটনা। হঠাৎ গুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছি। খবর পেলাম, পাশের বাড়িতে ডা. নারায়ণ চন্দ্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের ঘিরে ফেলল। তার মধ্যে মুবা, ওকে আগেই চিনতাম। মুবা বলল ভয় নেই। দৌড়াবেন না। আমি আপনাদের মারব না, আপনাদের আলাউদ্দিন খাঁর কাছে নিয়ে যাব। তারপর সুর বদলিয়ে বলল ‘তোরা কলেমা পড়ে মুসলমান হয়ে মুসলমান বিয়ে করবি।’ দুজন বাবাকে পাশে দাঁড় করিয়ে বলাবলি করছে। ভাবছিলাম টাকা চাইছে। কিন্তু এরি মধ্যে মুবা বাবাকে গুলি করার নির্দেশ দিল। একজন রাইফেল উঁচিয়ে গুলি করতেই বাবা লুটিয়ে পড়ল। তখন মুবা আমার দিকে এগিয়ে আসে, আমি চিৎকার করে বলি, ‘গায়ে হাত দিবি না।’ আমাদের কাছে সামান্য টাকা ও সোনার গয়না ছিল তা দিয়ে দিই। এখানে থাক বলে মুবা ঘরে ঢুকল। ইত্যবসরে অনেক লোকজন এসে যায়। আমরা রান্নাঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিই। কতিপয় ব্যক্তি ঝুঁকি নিয়ে আমাদের অন্যত্র সরিয়ে দেন।”
[১৫] আবু সাঈদ খান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!