ফুলপুর গণকবর, ময়মনসিংহ
যুদ্ধ শুরু হবার পর অনেকেই প্রাণের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। এমনি একজন ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলের পূর্ব বাখাই গ্রামের আতিকুল ইসলাম। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা যুদ্ধ শুরু হবার পরপরই পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যত্র চলে যাই। আবার কিছুদিন পর কোনো এক বৃহস্পতিবারে গ্রামে আসি। আমার আব্বা, আমি, বড় ভাই আহমেদ হোসেন ও জয়নাল আবেদীনসহ অন্যান্য আরও অনেকে বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতাম। তাদের গুলির বাক্স বয়ে আনতাম। বাড়িতে আসার পর সেখানে একজন মুক্তিযোদ্ধার লাশ দেখতে পাই। তাঁর বুকে গুলি লেগেছিল। তার কোমরে লুকানো অনেকগুলো গুলি পাই। আরেকটি বাড়িতে গ্রামেরই বৃদ্ধ বেকু শেখ ও আরেকজন মুক্তিযোদ্ধার লাশ দেখতে পাই। এঁদের একত্রে বেঁধে গুলি করা হয়। সেখান থেকে কিছুটা দূরে আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা ও এক শিখ সৈন্যের লাশ দেখতে পাই। আমরা সবাই মিলে এই পাঁচজনের লাশ রাস্তার ধারে জমির পাশে গর্ত করে গণকবর দিই। এ গ্রামে পাকসেনারা বাড়িঘর লুটপাট, নারী নির্যাতন, হিন্দু শিক্ষিত লোকজনকে বেছে বেছে হত্যা করে।
[৩৪] দিলরুবা বেগম
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত