পাবনা শহর ও শহরতলী গণকবর ও বধ্যভূমি, পাবনা
মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পাবনায় পাকবাহিনী ব্যাপক প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিল। এ যুদ্ধে পাবনার জনগণ, তৎকালীন জেলা প্রশাসন, পুলিশ, আনসার একযোগে অংশগ্রহণ করে, যার ফলে পাকবাহিনীর যথেষ্ট ক্ষতি হয়। অবশ্য এ জন্য পাবনার জনগণকে চরম মূল্যও দিতে হয়েছিল। পরবর্তীতে পাবনা পাকবাহিনীর দখলে এলে তারা এবং তাদের দোসররা এর প্রতিশোধ নেয়। হাজার হাজার বাঙালিকে হত্যা করে। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়, নারীদের ধরে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যা করে। জানা যায় নয় মাসের এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাবনার প্রায় ৫০ হাজার নর-নারী শিশু প্রাণ হারায়।
অ্যাডভোকেট আমিনুদ্দীন, ডা. অমলেন্দু দাক্ষী, আবু সাঈদ তালুকদার, হাসান ঘাত্রদের ২৫ মার্চ রাত্রে পাকহানাদার বাহিনী গ্রেফতার করে এবং নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। শুধু তাই নয় পাবনা জেলা স্কুলের শিক্ষক মাওলানা কাছিমুদ্দিন আহমেদ, জিসিআই-এর শিক্ষক শিবাজী মাস্টার, অ্যাডভোকেট শফিউদ্দিন, কোবাদ আলীসহ আরও বহু বাঙালিকে যুদ্ধের নয় মাস নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়। পাবনা জেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বাঙালি মুক্তিবাহিনী মানুষ এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবর, যাদের সম্মিলিতভাবে পুঁতে ফেলা হয়েছিল। এই জেলার বিসিক শিল্পনগরী এডওয়ার্ড কলেজ, হেমায়েতপুর, কৃষ্ণপুর, হাদল, নাগা ডেমরা, সাতবাড়িয়া, ডাব বাগান, নগরবাড়িঘাট প্রভৃতি স্থানে ছিল অসংখ্য গণকবর ও বধ্যভূমি।
[৩৪] দিলরুবা বেগম
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত