You dont have javascript enabled! Please enable it!

পাহাড়তলী ওয়্যারলেস কলোনি বধ্যভূমি, চট্টগ্রাম

পাহাড়তলী ওয়্যারলেস কলোনি বধ্যভূমি চট্টগ্রামের উল্লেখযোগ্য দশ বধ্যভূমির একটি। একাত্তরের দশই নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিনের ঘটনা। রমজান মাসের সকাল বেলা সিভিল পাইওনিয়ার ফোর্সের লোকেরা পাহাড়তলীর পাঞ্জাবি লাইন, ওয়্যারলেস কলোনি এবং বাহাদুর শাহ কলোনির ঘরে ঘরে ঢুকে সব বয়সী নারী-
পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধকে বাসা থেকে ধরে আনে। আনার সময় একেকজনকে একেক কথা বলেছে। ভয়-ভীতি দেখিয়েছে। তারা বলেছে— ‘চলিয়ে চেয়ারম্যান সাব আয়া, সবকো বোলায়া, স্টেটমেন্ট দেনা হোগা’, ‘এসপি আয়া স্টেটমেন্ট দেনা হোগা’, ‘মিলিটারি অফিসার আয়া আপ লোগকো বোলায়া’। লোকদের ভাববারও সময় দেয়া হয়নি। মসজিদ, মাজারে লুকিয়ে থাকা লোকদেরও ধরে নিয়ে যায়। সবাইকে ধোঁকা দিয়ে, জোর করে ওয়্যারলেস কলোনির কাছে পাহাড়ে দল বেঁধে নিয়ে যায়। এদের মাঝে একদল লুটপাটও করেছে। বন্দুক দেখিয়ে জোর করে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়েছে। সকাল ছয়টা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত ধরপাকড়, লুটতরাজ এবং হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। সেদিন এক এক বারে আনুমানিক দুইশত লোককে হত্যা করা হয়েছে। কোথাও কোথাও লাশগুলোকে এক সাথে করে পেট্রল দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। সেখানে হাজার হাজার নারী-পুরুষের লাশ পড়ে ছিল। দেশের শত শত বধ্যভূমির মতো এ ঘটনার মধ্যে দিয়ে পাহাড়তলী ওয়্যারলেস কলোনিও বধ্যভূমিতে পরিণত হয়।
[৩৪, ১৩৭] হাসিনা আহমেদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!