পিটিআই ভবন গণকবর, মাগুরা
মাগুরা শহরের পিটিআই ভবন ছিল অত্যাচারী পাকিস্তানিদের নির্মম নির্যাতনের কেন্দ্র। তারা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নিরীহ লোকদের ধরে এনে ঐ ভবনের দোতলায় আটকে রেখে নির্যাতনের পর হত্যা করত। হত্যার পর এসব লাশ পিটিআইর পেছনের মাঠে পুঁতে রাখত। এপ্রিলের শেষ নাগাদ পাক আর্মি ‘জয়বাংলা’ বলায় পাগলা বাড়িয়ার লালুকে গুলি করে হত্যা করে। শহরের কেন্দ্রস্থলে ব্যবসায়ী জগদ্বন্ধু দত্তকে গুলি করে হত্যা করে বাঙ্কারের ভেতর লাশ ফেলে রাখে। পাকসেনারা এখনকার পিটিআই, ভিটিআই, সরকারি বালক বিদ্যালয়, সরকারি কলেজ ভবনে ক্যাম্প স্থাপন করে। পিটিআই ছিল তাদের প্রধান ‘টর্চার সেল’। রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকহানাদাররা নারীদের ধরে এনে পিটিআই সংলগ্ন অফিসে ধর্ষণ ও জঘন্য নির্যাতনের পর হত্যা করে তাদের গণকবর দেয়া হতো পাশের একটি গর্তে। এছাড়া ওয়াপদা খালের কাছে রাজাকাররা বিভিন্ন বয়েসী লোকদের নিয়ে হত্যা করে। লাশ নদীর পানিতে ভাসিয়ে দিত। বিনোদপুর থেকে ধরে আনা ৭-৮ জন হিন্দু ব্যবসায়ীকে এক দড়িতে বেঁধে মাগুরায় নদীতে ফেলে দেয় রাজাকাররা। সেই পাকহানাদারদের নির্যাতন আর অত্যাচারের নীরব সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে পিটিআই ভবন।
[১৬৬] রফিকুল আকবর
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত