You dont have javascript enabled! Please enable it!

পশ্চিম পীর মহল্লা গণহত্যা ও গণকবর, সিলেট

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ৬ এপ্রিল বিকেল প্রায় ৩টার দিকে পাকহানাদারদের একটা বিরাট বহর ঢুকে পড়ে পশ্চিম পীর মহল্লার বস্তিতে। বস্তির ঘরে ঘরে ঢুকে বস্তির সাধারণ মানুষকে একত্রে জড়ো করে কলাপাড়ার এক বাড়ির সামনে এনে এদের ওপর বিনা কারণে অবর্ণনীয় অত্যাচার করে। তারপর সবাইকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এই গণহত্যায় যারা শহীদ হন তাদের সবার নাম জানা না গেলেও কিছু শহীদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন-
১. কালিয়া উড়িয়া, ২. নকুল উড়িয়া, ৩. মধ্য উড়িয়া, ৪. নিমাই উড়িয়া, ৫. সাইবা উড়িয়া, ৬. ছামিয়া উড়িয়া, ৭. বীর উড়িয়া, ৮. বেনী উড়িয়া, ৯. ছকুরিয়া উড়িয়া, ১০. বুধিয়া উড়িয়া, ১১. নিতাই উড়িয়া, ১২. লালা উড়িয়া, ১৩. বলিয়া উড়িয়া, ১৪. রমন উড়িয়া, ১৫. চুক উড়িয়া, ১৬. কন্টি সাধুর ২ ছেলে।
পাকিস্তানিদের ক্যাম্পটি ছিল টিলার উপর। ঐ গণহত্যার পরে পাকিস্তানি হানাদারেরা টিলার ওপর থেকে নেমে এসে বাড়ি বাড়ি ঢুকে নিরীহ যুবতীদের ওপর অমানুষিক পাশবিক নির্যাতন চালাত। সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন ধরে আনত বাঙালিদের যারা দেশকে ভালোবাসতো। এই সব দেশপ্রেমী বাঙালিকে টিলার ওপর দাঁড় করিয়ে গুলি চালাত। আর মুহূর্তেই জীবন্ত মানুষের দেহ নীরব- নিথর হয়ে টিলা থেকে গড়িয়ে পড়ে যেত। এভাবে প্রতিদিনের লাশ স্তূপীকৃত হয়ে পচে দুর্গন্ধ হতো বলে কয়েক দিন পরে বিভিন্ন ধর্মের পচা লাশগুলোকে একত্র করে পেট্রোলের সাহায্যে আগুনে পুড়িয়ে ফেলত। আবার কিছু কিছু লাশ একত্র করে গর্তে মাটিচাপা দিয়ে গণকবরও দিত।
[৫৫] গুলনাহার তুহীন

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!