You dont have javascript enabled! Please enable it!

পাকশী রেল কলোনি গণহত্যা, ঈশ্বরদী, পাবনা

পাকবাহিনী ঈশ্বরদী ও পাকশীতে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও পাশবিক অত্যাচার চালায়। ১২ এপ্রিল তারা পাকশী রেল কলোনিতে প্রবেশ করে অবাঙালিদের লাশ দেখতে পায়। ফলে পাক বর্বরতা চরমে পৌঁছে। তারা সামনে যাদের পায় নৃশংসভাবে হত্যা করে তাদের সবাইকে। এভাবে রেলকর্মচারী ইয়াকুব সাহেবকে বাসায় ঢুকে হত্যা করা হয়। অসুস্থ ইয়াকুব সাহেব নিজের বাসাতেই থেকে গিয়েছিলেন। সবাই কলোনি ছেড়ে গেলেও তিনি সেদিন যাননি। ইয়াকুব সাহেবের স্ত্রী পরবর্তী তিন দিন রান্নাঘরে লুকিয়ে থেকে স্বামীর লাশ আগলে ছিলেন। লতিফ সাহেব ও তাঁর দুই ভাইকে একসঙ্গে গুলি করা হয়। পাকশী হাসপাতালের আর. এম. রফিক সাহেবের বাসায় ঢুকে পশুরা একে একে পরিবারের প্রতিটি লোককেই হত্যা করে। হাসেম আলী মিলনায়তনের পিয়ন মালেক সাতদিন জনমানববিহীন পাকশী কলোনিতে তার বাসার ছাদের ওপর লুকিয়ে থেকে পাক বর্বরতা ও বাঙালি নিধনযজ্ঞ স্বচক্ষে দেখেছিলেন।
গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল যুক্তিতলায় ব্যবসায়ী জয়েন উদ্দীনসহ বেশকিছু লোককে। এঁদের লাশ দাফন করার মতো একজন লোকও সেদিন পাকশী কলোনিতে ছিল না। পাকশী সুইপার কলোনির সুইপাররা পরে লাশগুলো পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা করে। স্বাধীনতার পর তাদের তথ্যের ভিত্তিতে রফিকের পরিবারবর্গের এবং লতিফ ও তাঁর ভাইদের কবর শনাক্ত করা হয়। পাকবাহিনীর নৃশংসতার সাক্ষ্য বহন করে এসব কবর আজও কলোনির ভেতরেই ইতস্তত বিক্ষিপ্ত অবস্থায় বিদ্যমান।
[১৭] আবুল কালাম আজাদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!