You dont have javascript enabled! Please enable it!

পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি, জয়পুরহাট

জয়পুরহাট জেলার সদর থানার অন্তর্গত চরবরকত ইউনিয়নের পাগলা দেওয়ান গ্রামে ১৯৭১ সালে পাকসেনারা বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে সর্বস্তরের বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন বর্বর পাকসেনারা এ স্থানে ৮ মাস যাবৎ ঘাঁটি গেড়ে ছিল। এ সময় তারা আশপাশের নামুজানিধি, পাওনন্দা, খামপাওনন্দা, ছিটপাওনন্দা, গওপাড়া, চিরলা, রূপনারায়ণপুর, জগদীশপুর, ভুটিয়াপাড়া, চকউজাল, মল্লিকপুর প্রভৃতি গ্রামে খানসেনাদের ধ্বংসের অজস্র স্বাক্ষর রেখে গেছে। ‘৭১ সালের মে মাসের শেষের দিকে পাকসেনাদের একটি দল পাগলা দেওয়ানের জনৈক মোল্লাবাড়িতে ঘাঁটি স্থাপন করে। পাগলা দেওয়ানের মাজারকে সকলে ভক্তি শ্রদ্ধা করত। বর্বর সেনারা মাজারের চারপাশে বাঙ্কার নির্মাণ করে অবস্থান করেছিল। মাজারের ২৫ হাত দূরে একটি বধ্যভূমি রয়েছে। এখানে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে পুঁতে রাখা হয়। খানসেনারা পাগল দেওয়ানের মাদ্রাসাটিও ভেঙে ফেলে। রাজাকারদের সহযোগিতায় বহুদুরের গ্রাম থেকে বাঙালি তরুণদের এনে অত্যাচার চালিয়ে হত্যা করে। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় শত শত বাঙালি খানসেনাদের হাতে প্রাণ হারায়। আবার একসাথে ৭০-৮০টি গরু ও মহিষের গাড়ি যাত্রী বোঝাই করে ভারতে যাওয়ার সময় খানসেনারা ধরে এনে সবাইকে রাইফেলের সামনে দাঁড় করিয়ে একে একে হত্যা করে। খানসেনারা যুবতী মেয়েদের বাঙ্কারে আটকিয়ে রেখে দিনের পর দিন পাশবিক অত্যাচার করে। এই বাঙ্কারের বিভিন্ন গর্তে মেয়েদের শাড়ি ও ব্লাউজ পাওয়া যায়। এই পাগলা দেওয়ানের বধ্যভূমিতে ৪-৫ হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছে। এটি উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম বধ্যভূমি।
[৩৮৭] রফিকুল আকবর

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!