You dont have javascript enabled! Please enable it!

ন্যাশনাল ওয়েল মিল নির্যাতন কেন্দ্র, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের হরিহরপাড়ায় প্রায় প্রতিটি হিন্দু ঘরেই লুটতরাজ করে। হত্যা আর লুটতরাজেই রাজাকারদের দুষ্কর্ম সীমাবদ্ধ থাকে না। শুধু হিন্দুই নয় মুসলমান মা-বোনদেরও রাজাকাররা হানাদারদের হাতে তুলে দিয়েছে ওদের মনোসন্তষ্টির জন্যে।
পাকিস্তান ন্যাশনাল অয়েল মিলে পাকসেনাদের ক্যাম্প হওয়াতে রাজাকারদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেল অনেক। তারা এলাকার খবরাখবর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বর্বর হানাদারদের কাছে গোচরীভূত করতে থাকে। মে মাসের ৬- ৭ তারিখ থেকে শুরু হলো এখানে আরেক পৈশাচিক বর্বরতা। বাঙালি নিধনের এক বৃহৎ ঘাঁটিতে পরিণত হলো ন্যাশনাল অয়েল মিল। জল্লাদ সৈন্যরা ট্রাক বোঝাই করে নিরীহ ইপিআরদের বন্দি করে নিয়ে এল এখানে। আটকে রাখল একটি ঘরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায়। চালাল তাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন। প্রতিদিন রাত ৮টার পর থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চলত তাদের হত্যাযজ্ঞ। ন্যাশনাল অয়েল মিলের জেটিতে ১০-১৫ জন ইপিআরকে হাত-পা বেঁধে দাঁড় করিয়ে হত্যা করত। কখনো বুড়িগঙ্গা নদীর মাজা জলে দাঁড় করিয়ে একজনের কোমরের সাথে আরেকজনের কোমর রশি দিয়ে বেঁধে, হাত-পা, চোখ শক্ত কাপড় দিয়ে বেঁধে ব্রাশফায়ার করত নির্ভীক ও তেজোদীপ্ত ইপিআরদের। এদের সঙ্গে মাঝে মাঝে নিরীহ জনসাধারণকে হত্যা করত বর্বররা।
[১১০] রীতা ভৌমিক

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!