পরানগাঁও পাঠশালা স্কুল বধ্যভূমি, নওগাঁ
ডিসেম্বরের ১৮ তারিখেই যে বধ্যভূমিটি নওগাঁবাসী আবিষ্কার করেছিল সেখানে কোনো পুরুষের লাশ পাওয়া যায়নি। এখানে শুধু ১৪ বৎসর থেকে ৩০-৩৫ বছরের অগণিত মহিলার লাশ পাওয়া গেছে। পরানগাঁওর পাঠশালা স্কুলই ছিল এই বধ্যভূমি। এখানে একটা বড়সড় পানির কুয়ো ছিল। যুবতী বা মহিলাদের ধরে এনে এই কুয়ো সংলগ্ন একটা ঘরে প্রথমে পর্যায়ক্রমে তাদের কয়েক দিন ধরে পাকবাহিনীর সদস্যরা ধর্ষণ করত। তারপর তাদের জবাই করে অথবা জীবন্ত অবস্থায় হাত-পা বেঁধে এই কুয়োর ভেতরে নিক্ষেপ করে হত্যা করা হতো। ঠিক এই রকমেরই আরেকটি কুয়ো নওগাঁর পুরাতন জনতা ব্যাংকের পশ্চিম পাশে আবিষ্কার করা হয়েছিল। তবে তার রূপ এতটা বীভৎস ছিল না। এছাড়া আরো কয়েকটি বধ্যভূমি পরানগাঁওয়ে আবিষ্কার করা হয়েছে। এসবের মধ্যে মরদুলা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পূর্বদিকে রউফ মিয়ার বাগানের ও পরানগাঁওর ডাক্তার হাসান আলীর বাড়ির পূর্ব-দক্ষিণ কোণে অবস্থিত পরিত্যক্ত জমিতে অজস্র লাশ পাওয়া গিয়েছিল। এখন অবশ্য ওইসব জায়গায় গড়ে উঠেছে জনবসতি।
[১১] আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত