You dont have javascript enabled! Please enable it!

পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় গণহত্যা, পঞ্চগড়

আওয়ামী লীগের নেতা কমরুদ্দিন আহমদ এম.পি.এর পুত্র কাওসার আলম বাড়ি- ঘরের অবস্থা দেখার জন্য পঞ্চগড় শহরে এলে তাকে ধরে নিয়ে হত্যা করে আর্মিরা। শোনা যায় তাদের বাড়ির ভাড়াটে এক অবাঙালির সহযোগিতায় ধরা হয় তাকে। জুলাই মাসের শেষ দিকে পানিহাগা গ্রামের লখিয়া এবং তার চাচাতো ভাই ভাসানী ন্যাপের কর্মী আব্দুস সোবহানকে আজিজার রহমান রাজাকার সাইকেলে করে নিয়ে আসে ডাকবাংলোর পাক আর্মি ক্যাম্পে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সহায়তা করেন মুক্তিযোদ্ধাদের। ডাকবাংলার সামনে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। একই অপরাধে কৈকুরী নামক গ্রাম থেকে ধরে আনা হয় আবু আরেফকে। জেলা পরিষদ ভবনের পেছনে হত্যা করা হয় তাঁকে।
পঞ্চগড় ওয়াপদা ডিভিশনের কর্মচারী তালমা পাম্পের ইনচার্জ ও বরিশাল জেলার অধিবাসী হারুন অর-রশিদ অফিসের কাজে পঞ্চগড়ে এলে তাকে রওশনাবাগ থেকে ধরে এনে থানার পাশে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করা হয়। পঞ্চগড় রেল স্টেশনের অধিবাসী মনছুর আলী চৌধুরী এবং দর্জিপাড়া গ্রামের অধিবাসী ইয়াছিন আলীকে পঞ্চগড় ডাকবাংলায় ধরে এনে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করা হয়। নভেম্বরের প্রথম দিকে পঞ্চগড়ের তহসিলদার আব্দুর রহমান প্রামাণিককে অফিস থেকে ধরে নিয়ে যায় পাকবাহিনী। পঞ্চগড়ের ডাক বাংলায় আটক রেখে নানা ধরনের নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করা হয় ঠাকুরগাঁওয়ে।
পঞ্চগড়ে চাকরিরত কয়েকজন অফিসারকে পাকবাহিনী ধরে নিয়ে আসে থানায়। এরপর তাদের কোমরে রশি বেঁধে প্রায় এক সপ্তাহ যাবৎ রাস্তায় ঘোরানো হয়। এ সময় পথচারীদের জিজ্ঞেস করা হয়, এরা কেমন লোক! এই পদ্ধতিতে আরো অনেককে ঘোরানো হয়! তাদের একটি সাংকেতিক ভাষা ছিল ‘রেশন বন্ধ কর দো’ অর্থাৎ গুলি করে মেরে ফেলো। একবার কয়েকজন লোককে হত্যার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় পেছন দিক থেকে একজন পাকসেনা দৌড়ে গিয়ে জানায় ‘এই রোকো, রোকো, ইসকা হুকুম বদল গিয়া।’ এরপর ছেড়ে দেয়া হয় লোকদের।
[৫২] নাজমুল হক

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!