You dont have javascript enabled! Please enable it!

ধানমন্ডি বালিকা বিদ্যালয় নির্যাতন কেন্দ্র ও গণহত্যা, ঢাকা

ধানমন্ডি বালিকা বিদ্যালয়ও গোটা নয় মাস বাঙালি নির্যাতন আর হত্যাকেন্দ্রে পরিণত হয়। স্বাধীনতার পর এই কেন্দ্রে নির্যাতিত মোহাম্মদ ইউনুসের কাছ থেকে ধানমন্ডি বালিকা বিদ্যালয়ের কথা জানা যায়। জনাব ইউনুস থাকতেন এলিফ্যান্ট রোডে। তাঁর বাসা থেকে ১৭ নভেম্বর পাকসেনারা তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর এই কেন্দ্রেই তাঁর ওপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন। মোহাম্মদ ইউনুস জানান, প্রতিদিন বহু লোককে ধরে আনা হতো এই কেন্দ্রে। এরপর চলত নির্যাতন। তারপর অনেককেই হত্যা করা হয়েছে। তারা হত্যা করে কোনো ঘরে অথবা কোনো বাথরুমে ফেলে রাখত। তারপর সন্ধ্যা নামলে গাড়িতে করে ঐসব লাশ তুলে নিয়ে যাওয়া হতো। ঐ কেন্দ্রে বন্দিদের মধ্যে অনেক ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী এবং অ্যাডভোকেট ছিলেন। বন্দিদের মধ্যে ডাক বিভাগের কর্মচারী আবদুল আলিম, অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান, কাওসার আহমদ, নূরুল ইসলাম, নূর মোহাম্মদ প্রমুখের ওপর অমানুষিক নির্যাতনের কথাও তিনি বারবার স্মরণ করেন। এসব বাঙালির ভাগ্যে কী ঘটেছিল তা তিনি বলতে পারেননি। কারণ পাক অফিসার মেজর মোস্তাকের নির্দেশে তাঁকে ঢাকা সেনানিবাসে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এখানেও মোহাম্মদ ইউনুসের ওপর দিনের পর দিন নির্যাতন চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খবরাখবর জানতে চেয়েছিল। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানিরা তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেয় এবং সেখান থেকে তিনি ১৭ ডিসেম্বর মুক্তিলাভ করেন।
[১৩৭] সুকুমার বিশ্বাস

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!