দৌলতপুর বাজার ঘাট নির্যাতন কেন্দ্র ও বধ্যভূমি, খুলনা
খুলনা মহানগরীর অন্তর্গত দৌলতপুর থানায় অবস্থিত দৌলতপুর বাজার ভৈরব নদীর তীরে বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এখানে রয়েছে একটি লঞ্চঘাট। এর পাশে বাজারের প্রাণকেন্দ্রে আছে খেয়াঘাট। সুদীর্ঘকাল থেকে এই দৌলতপুর খেয়াঘাটটি নদীর দুই তীরের মানুষের সেতুবন্ধু হিসেবে কাজ করে। এ ঘাটের পাশেই রয়েছে পানচাষী ভবন। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ ভবনে স্থাপিত হয় রাজাকার ক্যাম্প। রাজাকাররা প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ধরে এনে ক্যাম্পে নির্যাতন চালাত। রাতে এদের এই ঘাটে এনে জবাই করে হত্যা করত ও লাশ নদীতে ফেলে দিত। দিনের বেলা ঘাটে দেখা যেত জমাট বাঁধা রক্ত এবং ঘাটের চারপাশে দেকা যেত ভাসমান লাশ। এখানে’কত লোককে হত্যা করেছে তার কোনো পরিসংখ্যান নেই.। পানচাষী ভবনে অবস্থানরত রাজাকাররা দৌলতপুরের বিভিন্ন বাড়িতেও হামলা চালাত। ২৯ জুলাই তারা এরকমই একটি হামলা চালায় দৌলতপুরের হাজী মুহসীন স্কুলের শিক্ষক এসএম হানিফের বাসায়। প্রচণ্ড বর্ষার মধ্যে তারা গাড়িতে করে এসে হঠাৎ হানা দেয়। এখানে বসবাসরত বিএল কলেজের ছাত্র ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতা রওনাকুল ইসলাম বাবর ও তার ভাই এসএম জাকির হোসেনকে রাজাকাররা ধরে নিয়ে যায় এবং কয়েক দিন পর মহেশ্বরপাশা প্রাইমারী স্কুলের পাশে তাদের গলিত লাশ পাওয়া যায়।
[৯২] মোল্লা আমীর হোসেন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত