দলদলিয়ার গণহত্যা, গাইবান্ধা
গাইবান্ধার সাঘাটা থানার বোনারপাড়া ইউনিয়নের দলদলিয়া গ্রামে পাকসেনারা দুঃসহ নির্যাতন, গণহত্যা, লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। ঐদিন ভোরে পাকবাহিনী ও অবাঙালিরা হিন্দুপ্রধান দলদলিয়া গ্রামটিকে ঘিরে ফেলে শুরু করে নারকীয় তাণ্ডব। পাকবাহিনীর তাণ্ডব ও কোলাহলে গ্রামবাসীর ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম থেকে ওঠার পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই শুরু হয় বেধড়ক মারপিট ও পৈশাচিক নির্যাতন। পাকবাহিনী গ্রামের ২৫ জনকে ধরে বোনারপাড়া হয়ে ফুলছড়ি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ধৃতদের আহাজারিতে সেদিন ফুলছড়ি থানা সদরের মানুষ নির্বাক হয়েছিল। চরম নির্যাতনের পর ৩ জনকে বয়স কম ও তারা নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়নি তাই ছেড়ে দেয়। ধৃত ২২ জনকে পাকবাহিনী ফুলছড়ি বধ্যভূমিতে হাত বাঁধা অবস্থায় নিয়ে আসে। জল্লাদদের অসতর্কতার সুযোগে দীনেশ চন্দ্র সরকার, পিতা বাবুরাম সরকার হাতের বাঁধন খুলে পালাতে সক্ষম হয়। পাকসেনারা তাকে ধাওয়া করেও তাকে ধরতে ব্যর্থ হয়। অবশিষ্ট ২১ জনকে সারিবদ্ধ করে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে। অলৌকিকভাবে ভুবন মোহন সরকার গুলির হাত থেকে বাঁচলেও জল্লাদের বেয়নেটের খোঁচায় তাকে মরতে হয়। জল্লাদরা ২১ জনের লাশ মাটিচাপা দেয়।
[৫৮০] ড. মো. মাহবুবর রহমান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত