You dont have javascript enabled! Please enable it!

দখিগঞ্জ হত্যাকাণ্ড, রংপুর

৩ এপ্রিল ‘৭১ শনিবার। রংপুরে ঘটল এক অকল্পনীয় হত্যাযজ্ঞ। ২৫ মার্চের রাতের গোলাগুলির মতোই মধ্যরাতে দখিগঞ্জ শ্মশানের কাছে গুলির শব্দ পাওয়া যায়। তখন পর্যন্ত কেউ কল্পনা করতে পারেনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হাত-পা বেঁধে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করতে পারে বাঙালিদের। হানাদার বাহিনী রংপুরের সর্বজনশ্রদ্ধেয় এবং প্রিয় মানুষ ‘জররেজ ভাই’সহ ১১ জন বন্দি বাঙালিকে দখিগঞ্জ শ্মশানে (রংপুর-মাহিগঞ্জ রোডে) চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় দাঁড় করিয়ে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। গুলিবিদ্ধ মানুষগুলো একজনের ওপর আরেকজন ঢলে পড়ে। গুলিবিদ্ধ মানুষের স্তূপ থেকে একজন প্রাণে বেঁচে যান। তিনি হলেন তাজহাটের দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক (মন্টু ডাক্তার)। দীনেশ ভৌমিক গুলিবর্ষণের সাথে সাথেই মাটিতে পড়ে যান এবং তার শরীরের ওপর অন্যরা পড়েন বলে তাঁর শুধু পায়ে গুলি লাগে। আর্মিরা চলে গেলে তিনি হামাগুড়ি দিয়ে শ্মশান থেকে বেরিয়ে এসে অন্যদের সহযোগিতায় ভারতে চলে যান। পরদিন দখিগঞ্জ শ্মশানের হত্যাযজ্ঞের ঘটনা রংপুরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি করে। মুহূর্তের মধ্যে গোটা জেলায় জানাজানি হয়ে যায়। মানুষ ছুটে আসে শ্মশানের দিকে নিহতদের দেখতে। এদিন থেকেই রংপুরের মানুষ পালাতে শুরু করে শহর ছেড়ে গ্রাম, গ্রাম ছেড়ে আরো নিরাপদ দূরত্বে সীমান্তের ওপারে।
[১৭৪] মুকুল মোস্তাফিজ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!