You dont have javascript enabled! Please enable it!

টেলিফোন ভবন গণহত্যা, দিনাজপুর

ত্রিতল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবনটি দিনাজপুর শহরের কেন্দ্রস্থল বাহাদুর বাজার এলাকায় অবস্থিত। এলাকাটি অবাঙালি অধ্যুষিত ছিল। এ ভবনটিতে একটি শক্তিশালী ওয়্যারলেস সেট ছিল যা দিয়ে পাকবাহিনী তাদের প্রভুদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করত। বিশেষ করে অসহযোগের সময় এখানকার পরিস্থিতির সংবাদ পৌঁছে দিত এবং সেখান থেকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা পেত। এক বাঙালি টেলিফোন অপারেটর তাদের কথোপকথন শুনে ফেলেছিল বলে ২৫ মার্চে তারা কুঠিবাড়িতে একটা স্বতন্ত্র টেলিফোন এক্সচেঞ্জ বসায়। এরপর পাকসেনা এবং অবাঙালিরা এ ভবনটিকে বাঙালি হত্যাযজ্ঞের কেন্দ্রে পরিণত করে। যুদ্ধ শুরু হলেও দিনাজপুর শহরে যেসব বাঙালি থেকে গিয়েছিল অবাঙালিরা পাকবাহিনীর কয়েকজন সদস্যসহ বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাঙালিদের ডেকে এনে এ টেলিফোন ভবনে নির্যাতন করে হত্যা করত। যুদ্ধের নয় মাসে শুধু বয়স্কদের নয়, শিশু হত্যারও মূল কেন্দ্র ছিল এ ভবনটি। পাকসেনারা ও তাদের দোসররা শিশুদের ওপরে ছুড়ে দিয়ে বেয়নেট দিয়ে গেঁথে বলত ‘এ হি হায় জয় বাংলা’। বহুকক্ষবিশিষ্ট এ ত্রিতল ভবনের প্রতিটি কক্ষেই এক হাত উঁচু রক্ত ও গলিত দেহ দেখতে পাওয়া গেছে দিনাজপুর শত্রুমুক্ত হওয়ার পর।
[৩৭৫] মঞ্জুমা সেলিম

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!