ডলুরা গণকবর, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জ জেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কি. মি. উত্তরে নারায়ণতলা বাজার। কাছাকাছি ভারতীয় সীমান্ত। এখানকার নলুয়া বাজারে মুক্তিবাহিনীর একটি ক্যাম্প স্থাপিত হয়। কিন্তু মাত্র ২০০ গজ দূরে কৃষ্ণতলায় ছিল পাকবাহিনীর ক্যাম্প। ১৭ জুলাই এক সংঘর্ষের পর মুক্তিসেনারা পেছনে সরে যেতে বাধ্য হয়। আর এই যুদ্ধে শহীদ হন মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপের অধিনায়ক মদন কুমার, গিয়াস উদ্দিন, মন্তাজ আলী, মজলিস আলী, রহিম বকস ও লস্কর আলী।
এই যুদ্ধের পর পাকবাহিনী বহু বেসামরিক লোককে হত্যা করে। এঁদের মধ্যে আছেন বাণীপুরের ধনু মিয়া, আনু মিয়া এবং মহিষের পারের আরো দুজন। পুড়িয়ে দেয় মিরের চর, জাহাঙ্গীরনগর, ঢালাগাঁও ও কোনাগাঁওসহ অনেকগুলো গ্রাম লুটপাট করে ডলুরা, কাইয়ারগাঁও, ঝরঝরিয়া, নইদার খামার, গোধিগাঁও, কামারগাঁও, জাহাঙ্গীরনগর, মঙ্গলকাটি, নুরুজপুর ও আইমারগাঁও। নারী নির্যাতন করে সর্বত্র। ১০-১৫টি মেয়েকে জোর করে বিয়ে করে তারা। দুটি মেয়েকে নিয়ে গেছে তারা পাকিস্তানে।
এই অঞ্চলে বিভিন্ন অপারেশনে প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা। তাঁদের যত জনের লাশ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছিল সেগুলো ডলুরায় সমাহিত করা হয়েছে।
[৪৬] তাজুল মোহাম্মদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত