জয়বাংলা বধ্যভূমি, মৌলভীবাজার
‘বাঁশবাগানোর কাছ দিয়া গেলে এখনও গা ছমছম করে। ওই বাঁশবাগানোর ভিতরে শয়ে শয়ে নিরপরাধ নারী-পুরুষ ধরিয়া নিয়া গুলি করি মারছে। গুলি খাইয়া না মরলে কোদালের আছাড় (হাতল) দিয়া বাইরাইয়া (পিটিয়ে) মারছে পাকিস্তানি সৈন্যরা। কিন্তু জায়গাটা ৩৬ বছর ধরি হেলায় পড়ি রইল।’ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ভারত সীমান্তঘেঁষা সিন্দুরখান বাজারসংলগ্ন একাত্তরের বধ্যভূমি ‘জয়বাংলা বধ্যভূমি’ দেখিয়ে এ কথা বলেন ডা. মইন উদ্দিন।
একাত্তরে তিনি তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র। বধ্যভূমির কাছেই তাঁদের বাড়ি ছিল। প্রতিদিন রাতে তাঁরা বাঁশবাগানে গুলির শব্দ শুনতেন। পরদিন এসে দেখতেন চোখ বাঁধা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের লাশ পড়ে আছে। দিনদুপুরে শিয়াল-কুকুরে লাশ নিয়ে টানাটানি করছে।
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রত্যন্ত জনপদে এই সিন্দুরখান বাজার। ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় একাত্তরে বাজারটি ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি শক্তিশালী ক্যাম্প ছিল এই বাজারে।
প্রত্যক্ষদর্শী মো. আব্দুল জব্বার বলেন, স্বাধীনতার পর দেশে এসে তারা ওই বধ্যভূমি থেকে ১৩৫টি মাথার খুলি উদ্ধার করেন।
[৩৬৭] বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত