জাফরগঞ্জ গণহত্যা, রংপুর
১৯৭১ সালের ৮ জুন মঙ্গলবার গেরিলারা রংপুর রেডিও স্টেশনের সম্মুখে এবং ওরিয়েন্টাল সিনেমা হলের সামনে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে দখলদার বাহিনী মরিয়া হয়ে ওঠে। তারা গণহারে সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করতে থাকে। রেডিও স্টেশনের আশপাশ থেকে বেশ কিছু মানুষকে ধরে নিয়ে যায়। রংপুর ক্যান্টনমেন্টে অমানুষিক নির্যাতন চালাতে থাকে তাদের ওপর। ১০ জুন বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রংপুর-সৈয়দপুর সড়কের জাফরগঞ্জ ব্রিজের কাছে ২৪ জন সাধারণ মানুষকে গুলি করে হত্যা করে হানাদার বাহিনী। ব্রিজের নিচেই পড়ে থাকে লাশগুলো। এদের দাফন করার জন্য এগিয়ে আসতে পারেনি কোনো মানুষ। লাশগুলোর প্রত্যক্ষদর্শী, প্রবীণ ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, এরা সবাই ছিল সাধারণ কৃষক, শ্রমিক শ্রেণীর মানুষ। সকলের পরনে ছিল লুঙ্গি। এরা কোনো দল মিটিং, মিছিল করত না মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দানের অপরাধে গ্রেফতার করা হয়। তাদের অপরাধ ছিল তারা সবাই বাঙালি। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানিয়েছেন, এদের গ্রেফতারের ব্যাপারে জড়িত ছিল তারাগঞ্জ থানার সে সময়ের প্রভাবশালী একজন বাঙালি। ২৪ জন মানুষের লাশ পড়ে ছিল ঘটনাস্থলে ২-৩ দিন যাবৎ। কুকুর-শকুনেরা খাবলে খাবলে খেয়েছে সেইসব বাঙালিকে।
[১৭৪] শাহ আব্দুর রাজ্জাক ও মুকুল মোস্তাফিজ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত