You dont have javascript enabled! Please enable it!

জাটিভাঙ্গা বধ্যভূমি ও গণহত্যা, ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁও থানার বালিয়া ইউনিয়নের কিসমাত সুকানপুকুরী মৌজার জাটিভাঙ্গা গ্রামটি এখন বধ্যভূমির গ্রাম হিসেবে সমধিক পরিচিত। জাটিভাঙ্গা হাটসংলগ্ন পশ্চিম পাশে উপজেলা পরিষদের রাস্তার উপরে একটি ছোট পুল। এরই নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট্ট খালের শুকনো মাটি প্রায় এক হাজার মানুষের রক্তে সিক্ত হয়েছিল একাত্তরের এপ্রিল মাস।
ঠাকুরগাঁও থানার একটি সমৃদ্ধিশালী এলাকা। এই এলাকার অধিকাংশ‍ই ছিল হিন্দু। ঠাকুরগাঁও শহর থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে এই এলাকা। এলাকা থেকে ভারতের উদ্দেশে পলায়নপর নিরীহ প্রায় এক হাজার মানুষকে এখানে হত্যা করা হয়েছে।
এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে যখন মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ডিফেন্স উঠিয়ে চলে যায় এবং খানসেনারা এলাকার পর এলাকা দখল করে সর্বত্র অগ্নিসংযোগ করে যাচ্ছিল।
এখানে শহীদ হওয়া অধিকাংশ লোকজনই ছিল হিন্দু। তারা ভারতে গিয়েছিল এবং খানসেনাদের প্রলোভনে তাদের অনেকে ফিরে এসে এক বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। কয়েক দিন পর খানসেনারা এসে তাদের সকলকে হত্যা করে। ভারতে পালিয়ে যাবার সময়ও অনেক লোককে হত্যা করা হয়। যারা হত্যা করেছে তারা সবাই বিহারি ও খানসেনা। বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দুদের ধরে নিয়ে এসে এখানে হত্যা করা হয়। খানসেনারা এলাকায় আগুন লাগিয়ে অনেক লোক মেরে ফেলেছ।
পলায়নপর বিভিন্ন মানুষকে একত্রিত করে বাড়িতে পুড়িয়ে মেরেছে এবং বেশ কিছু মানুষকে পুলের নিচেই গুলি করে মেরেছে। যুদ্ধ শেষে এখানে এসে অনেক মাথার খুলি ও হাড়হাড্ডি পাওয়া যায়। মাটি দিয়ে সব ঢেকে দেয়া হয়।
[১৫] মোহাম্মদ এমদাদুল হক

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!