ছাতক বাজার গণহত্যা, সিলেট
সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলা মুক্তিযুদ্ধে এক গৌরবময় ভূমিকা পালন করেছে। এ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর মুখোমুখি যুদ্ধ হয়েছে অনেকগুলো। এসব যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন বাংলার বহু শ্রেষ্ঠ সন্তান।
যুদ্ধে শহীদ হওয়া ছাড়াও পাকবাহিনী কয়েকশ নিরস্ত্র লোককে হত্যা করে। পাকবাহিনী এ জাতীয় নিধনযজ্ঞের সূচনা করে ২৮ এপ্রিল ছাতক বাজারে প্রথম প্রবেশের পরপরই। হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি চলে লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ও নারী ধর্ষণ ইত্যাদি। ছাতক বাজার প্রথমে লুট করা হয়। তারপর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
জুন মাস। পাকবাহিনীর গণহত্যা কার্যক্রম তখন চরম পর্যায়ে। তারা যেখানে যাকে সন্দেহ করেছে, তাকেই হত্যা করেছে।
গ্রামের পর গ্রাম পোড়াতে থাকে নির্বিচারে। তাদের পাশাপাশি রাজাকার বাহিনীও সমভাবে তৎপর। রাজাকারদের সর্দার তোতা মিয়ার নেতৃত্বে একদিন ধরে আনা হয় ৪৩ জনকে। বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়ে যাদের ধরে নিয়ে আসা হয় তাঁদের প্রাণ কেড়ে নেয়া হলো, কত দোকান, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হলো, কত মহিলা ধর্ষণ ও লাঞ্ছনার শিকার হলেন, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। হাটবাজার, রাস্তা-সেতু ও গ্রামপ্রান্তর ধ্বংস করে গোটা এলাকাকেই একটি সন্ত্রাসের রাজত্বে পরিণত করে পাকবাহিনী।
[৪৬] তাজুল মোহাম্মদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত