You dont have javascript enabled! Please enable it!

চাঁদপুর শহর গণহত্যা ও গণকবর, চাঁদপুর

মেঘনা তীরের এই শহরটিতে রয়েছে বধ্যভূমি ও কসাইখানা। ৭ এপ্রিলের পর চাঁদপুর পাকবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। মেজর ইফতেখারের নেতৃত্বে ৭৮ থেকে ৯৬টি যানের এক বিরাট বহর ও সৈন্য কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর শহরে প্রবেশ করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। হানাদাররা টেকনিক্যাল স্কুলে তাদের ঘাঁটি গড়ে তোলে। ১০ এপ্রিল থেকে হঠাৎ সান্ধ্য আইন জারি করে। পাকসেনাদের চেয়েও এখানে তাদের দোসরদের জুলুমের ভয়ে মানুষ আতঙ্কিত থাকত। পাকবাহিনীর সহযোগিতায় তাদের দোসররা এখানকার পাঁচ হাজার নিরপরাধ বাঙালিকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয় বলে মনে করা হয়। চাঁদপুর রেল স্টেশন এলাকায় রয়েছে বধ্যভূমি। এখানে একটি কসাইখানাও ছিল। চাঁদপুর পুরনো বাজারে নূরিয়া হাইস্কুলে ছিল আলবদর বাহিনীর ক্যাম্প। রেল স্টেশনের অফিসসমূহ এবং রেস্ট হাউসেও পাকিস্তানি ও তাদের দোসরদের ক্যাম্প ছিল। শান্তি কমিটির সহযোগিতায় তারা চাঁদপুর পুরান বাজার ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহে হত্যা, লুণ্ঠন, নারী নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ করে এবং নারকীয় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তারা নির্বিচারে গণহত্যা ও বহু নারীর সম্ভ্রম নষ্ট করেছে বলে দালাল ফজলুল বারী বিবৃতি দান করে। পাকসেনারা স্টেশনের ওয়েটিং রুম, জিআরপি হাজত ও আক্কাস আলী হাইস্কুলকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করে। অসংখ্য বাঙালির রক্তাক্ত মৃতদেহ স্তূপীকৃত অবস্থায় এ বধ্যভূমিগুলোতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। রেলের ডোম ছনুয়া ও গয়াকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে এসব লাশ সরাতে বাধ্য করা হতো।
[৩৪] ডা. এম.এ. হাসান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!