ঘাগটিয়া গ্রাম গণহত্যা, সিলেট
কুলাউড়া শহরের প্রায় দুই মাইল পূর্বে ঘাগটিয়া গ্রাম। এ গ্রামের আবদুর রশিদ পংকু ছিলেন কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক। চা বাগানের তত্ত্বাবধায়ক জামাল তাঁকে ধরার জন্য পাকবাহিনী নিয়ে যায় তাঁর বাড়িতে কিন্তু পংকু তখন ভারতে। মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে ঘরবাড়ি ত্যাগ করে বহু আগেই তিনি সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। তাই পাকড়াও করে আবদুর রশিদ পংকুর বৃদ্ধ পিতা আবদুল মান্নান এবং ভাই আবদুর রহমানকে। আবদুল মান্নান মুসলিম লীগ করতেন। এলাকার একজন গণমান্য লোকও বটে। এই অঞ্চলের সালিসী বিচারক হিসেবে ছিল তার পরিচিত; কিন্তু তিনিও রেহাই পেলেন না। তারপর কোথায়, কখন, কীভাবে তাঁদের হত্যা করা হয় সে কথা আর জানা যায়নি।
আর একবার পাক হায়েনারা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিনা প্ররোচনায় গুলি করে হত্যা করে আজৈ মিয়া ও ফরিদ উদ্দিন নামের দুই ব্যক্তিকে। এভাবে আর একদিন বুলেটে ঝাঁঝরা করা হয় গাজীপুরের মজই মিয়ার বুক। কামারকান্দির সুলতান আহমদকেও হত্যা করে পাকবাহিনী গুলি করে।
এছাড়া এই অঞ্চলে আরো বহু লোককে ধরে এনে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। বাড়িঘর নির্বিচারে পুড়িয়ে দেয়া হয়। নারী নির্যাতনও করে তারা বহু স্থানে। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে শহীদ হন এই এলাকার মিরপুরের আবদুল মালিকসহ আরো অনেকে।
[৪৬] তাজুল মোহাম্মদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত