You dont have javascript enabled! Please enable it!

চরযোশহরদী হত্যাকাণ্ড, ফরিদপুর

৩০ এপ্রিল সকালে একদল পাকসেনা ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার চরযোশহরদী গ্রামে প্রবেশ করে। সঙ্গে ছিল দেশীয় দোসর ঘুঘু মিয়া, কোটন মুন্সি, হালিম মুন্সি, টুকু প্রমুখ।
চরযোশহরদীর নেপাল সাহার বাড়িতে ফরিদপুর ও ভাঙ্গা থানার অনেক হিন্দু পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের মধ্যে ছিলেন ভাঙ্গার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গুরুদাস রায়, তার ভাতিজা কল্যাণেশ্বর রায়সহ আরো অনেকে।
সকাল সাতটায় পাকসেনারা নেপাল সাহার বাড়ির দিকে অগ্রসর হয়। তখন অনেকেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে সমর্থ হলেও অশীতিপর বৃদ্ধ গুরুদাস রায়ের পক্ষে সরে যাওয়া সম্ভব হলো না। পাকসেনারা তাকে ধরে বাড়ির আঙিনায় একটি গাছে বাঁধল। তারপর শুরু হলো নির্মম নির্যাতন। তার কাছে বিরাট অঙ্কের টাকা ও সোনা দাবি করে। এক পর্যায়ে মুমূর্ষু গুরুদাস রায়কে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ঐ দিন নির্যাতন আর গুলির আঘাতে যারা প্রাণ হারালেন তাদের মধ্যে কল্যাণেশ্বর রায়, রামকৃষ্ণ রায়, সতিস্বর রায়, নবদ্বীপ কুণ্ড, মাখন চন্দ্র বৈরাগী, মলিন মাঝির নাম জানা যায়। ঐ ঘটনায় রামকৃষ্ণ রায়ের জামাতাও নিহত হন।
ওরা নেপাল সাহার বাড়ি থেকে তার ও আশ্রয় গ্রহণকারীদের সোনাদানাসহ অনেক সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়। পাকসেনা ও রাজাকাররা স্থানীয় ব্যক্তিদের লুটপাটে প্ররোচিত করে। এতে কিছু সংখ্যক লোক লুটে অংশগ্রহণ করে।
হিন্দুদের আশ্রয় দান ও তাদের ধনসম্পত্তি রাখার দায়ে একই গ্রামের বাবর আলী মাতুব্বরের বাড়িতে লুটপাট করে এবং বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়া হয়। তারপর পাকসেনা ও তার সহযোগীর নদীর ওপার মুকসুদপুর (গোপালগঞ্জ) থানার বাটিকামারী বাজারে লুটপাট ও হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে
[১৫] আবু সাঈদ খান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!