You dont have javascript enabled! Please enable it!

গোবিন্দ নগর মন্দির গণহত্যা ও গণকবর, ঠাকুরগাঁও

১৫ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও শহরের পতন হলে খানসেনারা তাদের দোসর অবাঙালি বিহারীদের নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকটি সমাবেশ করে বলে জানা যায়। ঠাকুরগাঁও স্টেশন রোডে অবস্থিত ‘খানকা শরিফ’কে এরা ভীষণ ভয় পেত। ফলত খানকা শরিফে এরা কখনোই হামলা করতে যায়নি। ঠাকুরগাঁও ইপিআর ক্যাম্পকে এরা হেড কোয়ার্টার বানিয়ে নির্বিঘ্নে যত ধরনের হত্যা ও নির্যাতন চালিয়েছে তার বেশির ভাগই সম্পন্ন করেছে দিনের বেলায়।
অবাঙালি বিহারিদের দেয়া তালিকা অনুসারে খানসেনারা মে মাসের ১২ তারিখে স্টেশন রোডের ৬০ বছরের বৃদ্ধ ইয়াসিন আলীসহ তাঁর ৫ পুত্র ধরে নিয়ে আসে গোবিন্দনগর মন্দিরের কাছে। মন্দিরের পাশে বাড়ি ছিল পড়া মোহাম্মদের। অবাঙালি বিহারি ও খানসেনারা পড়া মোহাম্মদ ও তাঁর কিশোর পুত্র মাইনদ্দীনকে বাড়ি থেকে ডেকে আনে এবং ওদের সামনেই কোদাল দিয়ে কবর খুঁড়তে বলে।
জীবনের ভয়ে পড়া মোহাম্মদ তার কিশোর পুত্রসহ কবর খুঁড়তে থাকে। কিন্তু এরা তো তখনো জানত না যে এই কবরে আগে নিয়ে আসা ৬ জনের সাথে তাদেরও শেষ আশ্রয় হবে। কবর খোঁড়ার পর খানসেনারা একে একে ইয়াসিন আলীকে রেখে তার ৫ পুত্রকে তারই সামনে গুলি করে হত্যা করে। বৃদ্ধ ইয়াসিন আলীর হাজার আকুতিতেও মন গলেনি খানসেনাদের। ৫ পুত্রকে চোখের সামনে গুলি করে মারার দৃশ্য দেখে ইয়াসিন আলী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ সময় পাশের আরেক বাড়ি থেকে আব্দুল মজিদ পিতা দুন্দি মিয়া এবং আনিসুর রহমানকেও ধরে আনা হয়। খানসেনারা একে একে তাদেরও হত্যা করে। ৭ জনকে মারার পর তারা পড়া মোহাম্মদ ও মাইনুদ্দিনকেও গুলি করে মেরে ফেলে এবং একই গর্তে মাটি দিয়ে চলে যায়।
[ ৯৫] মোহাম্মদ এমদাদুল হক
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!