You dont have javascript enabled! Please enable it!

গজারিয়া গণহত্যা ও গণকবর, মুন্সিগঞ্জ

বাংলাদেশে যে সমস্ত এলাকায় পাক সেনাবাহিনী গণহত্যা চালায় সেগুলোর অন্যতম একটি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানা। একাত্তুরের ৯ মে গজারিয়া থানার গোসাই চর, নয়ানগর, বালুচর বাশগাও ও গজারিয়া গ্রামের নিরীহ ও নিরপরাধ গ্রামবাসীর ওপর পাক সেনাবাহিনী নির্মম ও জঘন্যতম বর্বরতার মধ্যদিয়ে হত্যাকান্ড চালিয়ে ৩৬০ জন নর-নারী ও শিশুকে পশুপাখির মত গুলি করে হত্যা করে। আহত করে আরো দুই শতাধীক মানুষকে। পাকসেনারা শিশুদের ধরে আছাড় মেরে হত্যা করে। সে দিন ৯ মে ভর ৫ টায় ফজরের নামাজ পড়ার জন্য মুসল্লিরা যখন মসজিদে গেছেন সেই সময় পাক সোইন্যবাহিনী মেঘনা ও ফুলদী নদীর পাড় থেকে বৃষ্টির মত গুলিবর্ষণ শুরু করে। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে লোকজন ঘর থেকে বের হয়ে কেউ জঙ্গলে, কেউ ধানক্ষেতে আশ্রয় নেয়। আবার কেউ ফুলদী নদীর চরে কিম্বা রসুলপুর গ্রামে আশ্রয় নেয়। পাকসেনারা পলায়নপর মানুষের উপরও নির্মমভাবে গুলিবর্ষণ করে। তারা যাকে যে অবস্থায় পেয়েছে সে ভাবেই তাঁকে হত্যা করেছে। গজারিয়া থানা সেদিন রক্তাক্ত লাশে ভরে গিয়েছিল আউশ ধানের ক্ষেতে এবং খালে লাশগুলো ভাসছিল পাকবাহিনী এখানে লঞ্চযোগে ফুলদী নদী পথে এসে দিনব্যাপি হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিকাণ্ড ও লুটপাট করে হত্যা করে ৩৬০ জন গ্রামবাসীকে এর মাঝে ১৫৯ জনই গোসাইচর গ্রামের। সে দিন লাশ সতকারের মত কেউ ছিল না। ভয়াবহ এই হত্যাকাণ্ডের পর গ্রামগুলো জনশূন্য হয়ে পড়ে। পরদিন ১০ ম৩ সকালে গ্রামবাসী পড়ে থাকা লাশগুলো দাফন শেষে গণকবর দেয়। লাশগুলো দাফন করার মোট কোন কাপড়ও না থাকায় কলাপাতা দিয়ে লাশ দাফন শেষ করা হয়। গজারিয়া ইউনিয়নের ফুলদী নদীর উপকন্ঠের গ্রামগুলতে মুক্তিবাহিনীর আস্তানা গড়ে উঠেছে, গজারিয়া এলাকার মুসলিম লীগ ও শান্তি কমিটির স্বাধীনতা বিরোধী সদস্যরা পাক সামরিক বাহিনীকে খবর দেয়। এ খবরের ভিত্তিতেই গাম গুলোতে হামলা চালানো হয়।
[৪৭৯] হাসিনা আহমেদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!