কেওয়ার গণহত্যা, মুন্সিগঞ্জ
১৯৭১ সালের স্বাধিনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময় ৯ এপ্রিল পাক সামরিক বাহিনী মুন্সিগঞ্জ মহকুমায় (জেলা) প্রবেশ করে শহরসহ সকল থানায় ব্যাপক জ্বালাও-পোড়াও, নির্যাতন, গ্ণহত্যা ও হামলা শুরু করে। পাকবাহিনীর আগম্নের সংবাদ পেয়ে শহরের অধিকাংশ মানুষ বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন শহর ছেড়ে নিকটবর্তী গ্রামগুলোতে আশ্রয় গ্রহণ করে। রাজাকারদের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৪ মে ভোর রাতে মেজর জাভেদ আক্তারের পরিচালনায় পাকবাহিনী জেলার সদ্র থানার অদূরে কেওয়ার গ্রামটি ঘিরে ফেলে। কেওয়ার চৌধুরী বাড়িতে আশ্রিত অনীল মুখার্জী, কেদারেশ্বর চৌধুরী ওরফে জলা মোক্তার, বাদল ভট্টাচার্য, ডা সুরেন্দ্র চন্দ্র সাহা, দ্বিজেন্দ্র সাহা, সুনীল মুখার্জী ও শচীন মুখার্জীসহ গ্রামের ২২ জনকে রাতের আধারে এসে লোহারপুল সংলগ্ন খাল পাড়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। আইনজীবী ও সর্বজনশ্রদ্ধেয় মন্মথ চৌধুরী মুখার্জীকে বেশ কিছুদিন আটকে রেখে লঞ্চঘাটে নৃশংসভাবে হত্যা করে নদীতে নিক্ষেপ করে। পাকসেনারা ৯ ডিসেম্বর ভোররাতে পুনরায় এই গ্রামে হামলা চালিয়ে গ্রামের বীরেন্দ্র রায়ের পুত্র নির্মল, সূর্যকান্ত রায়, জয়গোপাল সাহা, মতিলাল সাহাসহ গ্রামের আরও কয়েকজনকে ধরে পাশের একটি বধ্যভুমিতে নিয়ে যায়। সেখানে পাকসেনারা তাদের সবাইকে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করে।
[৩৪, ১৮৭] হাসিনা আহমেদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত