কালিগঞ্জ গণহত্যা, সিলেট
সিলেট জেলা শহর তেহেকে কালিগঞ্জের দূরত্ব ৩৫ মাইল। কালিগঞ্জ একটি বড় বাজার। ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি বলে এখানকার জনগণ মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্নভাবে পালন করেছে কার্যকর ভূমিকা। কালিগঞ্জের কাছেই মাতার গ্রাম। সেখানকার আব্দুল হক ছিলেন মুক্তিবাহিনীর এক দুর্ধর্ষ যোদ্ধা। অন্যদিকে তাঁর এক ভাই বকুল আহমদ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সংবাদ সংগ্রহ করে মুক্তিবাহিনীকে সরবরাহ করার জন্যে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন; কিন্তু এই ঘটনা গোপন থাকেনি বেশিদিন। সন্দেহ হলো অন্য রাজাকারদের। প্রকাশও করে তারা মুনিবদের কাছে সেই সন্দেহের কথা। ফলে পাকড়াও করা হলো বকুল আহমেদকে। নিয়ে যাওয়া হলো তাকে কালিগঞ্জ। বাদামি চামড়ার ক্যাপ্টেন বসারত তাকে দিল মৃত্যুদণ্ড। শেষে ইছামতি মাদ্রাসার সামনে দাঁড় করিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। একই দিনে উয়াশা থেকে ধরে আনা হয়েছিল খলু মিয়াকে। তাকেও বরন করতে হয় একই ধরণের পরিণতি।
কালিগঞ্জ শত্রুমুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত আশপাশের গ্রামগুলো থেকে বহু লোককে ধরে এনে পাকবাহিনী হত্যা করেছে। লুটপাট করেছে, সমানে অগ্নিসংযোগ করেছে অসংখ্য বাড়িঘরে। পাশাপাশি নির্যাতন চালায় অসংখ্য নিরীহ মানুষজনের ওপর। গ্রামে গ্রামে মা-বোনদের ওপরও চালায় তারা পাশবিক অত্যাচার। ধৃত মুক্তিযোদ্ধাদের গুলি করে হত্যা করেছে প্রদর্শনী করে।
[৪৬] তাজুল মোহাম্মদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত