You dont have javascript enabled! Please enable it! কিশোরগঞ্জ সুগার মিল গণহত্যা | কিশোরগঞ্জ - সংগ্রামের নোটবুক

কিশোরগঞ্জ সুগার মিল গণহত্যা, কিশোরগঞ্জ

১৯৭১ সালে পাকবাহিনী কিশোরগঞ্জ সুগার মিলের ডাকবাংলোতে ক্যাম্প করে সে সময় এখানে বড় ধরণের একটা গণহত্যা সংঘটিত হয়। প্রত্যক্ষদর্শী মো. জামালউদ্দীন বলেন, সেদিন সন্ধ্যে সাতটার দিকে পাকবাহিনী এই এলাকায় প্রথম প্রবেশ করে। তখন আমাদের বাড়ি ছিল সুগার মিলের পাশে। প্রথম দিন পাকসেনারা বিভিন্ন স্থান থেকে ১৭-১৮ জনকে ধরে এনে সুগার মিলের একটি কক্ষে আটকে রাখে। সেদিনই রাত নয়টার দিকে গুলির শব্দ শোনা যায়। আমি দেখি হানাদাররা ধরে আনা লোকদের নদীতে হাটুসমান পানিতে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। নদীর পানি তাঁদের রক্তে লাল হয়ে যায়। এই মিলের দুজন দারোয়ান সোবহান ও রহিম লাশগুলো নদীর পানিতে ভাসিয়ে দেয়। আমরাও অনেকের লাশ পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছি। দিনের পর দিন তারা এই হত্যাকাণ্ড চালায়। রাতের বেলায় ভয়ে মানুষ বাতি জ্বালাত না, পাকসেনারা রাত হলে টর্চ দিয়ে বাড়ি বাড়ি মানুষ খুজে ধরে এনে হত্যা করত। একদিন একই পরিবারের ৭-৮ জন লোককে এখানে ধরে আনে। তাঁদের মধ্যে একজন কবরস্থানের দেয়াল টপকে নদী পার হয়ে ওপাড়ে ওঠার পর তাঁর লুঙ্গি খুলে যায়। তাঁর হাত বাঁধা থাকায় লুঙ্গি ফেলে উলঙ্গ অবস্থায় তিনি দৌড়ে পালিয়ে যান।
এছাড়া পাকসেনারা এখানকার বিভিন্ন বাড়িতে এসে জোরপূর্বক হাঁস, মুরগি, গরু ছাগল ধরে নিয়ে যেত, যুবতী মেয়েদের ধরে নিয়ে সুগার মিলের একটি কক্ষে আটকে রেখে ধর্ষণ করত।
[৩৪] দিলরুবা বেগম

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত