কামান্না গ্রাম গণহত্যা ও গণকবর, মাগুরা
’৭১-এর ২৬ নভেম্বর হানাদার বাহিনীর আকস্মিক হামলায় শহীদ হয়েছিলেন ২৮ জন বীর যোদ্ধা। মাগুরার হাজীপুর এলাকা থেকে ৪২ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যার প্রাক্কালে হাজীপুর সংলগ্ন শৈলকূপা থানার কামান্না গ্রামে গিয়ে পৌছে। কামান্না গ্রামের মাধব ভৌমিকের পরিত্যক্ত বাড়িতে রাত যাপনের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা আশ্রয় নেন। স্থানীয় দালালদের কাছে খবর পেয়ে পাকসেনাদের এক বিশাল বাহিনী ২৬ নভেম্বর প্রত্যুষে ওই বাড়ি ঘিরে একযোগে গুলিবর্ষণ শুরু করে। ঘটনার আকস্মিতায় মুক্তিযোদ্ধারা দিশেহারা অবস্থায় স্থান ত্যাগে সক্ষম হলেও ঘটনা স্থলেই শহীদ হন ২৮ যোদ্ধা। এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বন্দি থাকা পাকসেনাদের গুপ্তচর হবিবর মোল্যা, খাতের শেখ, আমিন উদ্দিনও নিহত হন। পাকসেনারা এলাকা ত্যাগ করলে পার্শ্ববর্তী এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা এসে গ্রামবাসীর সহায়তায় কামান্না স্কুল মাঠসংলগ্ন নদীর ধারে ২৮ শহীদকে ৫টি গণকবরে সমাহিত করেন। এ শহীদদের স্মরণে সরকারি অর্থ ব্যয়ে মাগুরার হাজীপুর হাইস্কুল মাঠে স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। এ ২৮ শহীদ হলেন – মাগুরা জেলার তাজুল ইসলাম, সেলিম বিশ্বাস (কনস্টেবল), খন্দকার রাশেদ, মতলেব মুন্সী, মাসিম মুন্সী, গৌরচন্দ্র রায়, গোলজার রহমান, শহিদুল ইসলাম (কনস্টেবল), রিয়াত আলী, আনিসুর রহমান, আ. আজিজ (সেনাসদস্য), আ. সালেক, মমিন উদ্দিন, হোসেন আলী, অধীর শিকদার, আলী হোসেন, আব্দুল কাদের (কনস্টেবল), সোলেমান বিশ্বাস, আলমগীর হোসেন, ওহিদুর রহমান, শরিফুল ইসলাম (ইপিআর), মুন্সী আলীউজ্জামান, নির্মল বিশ্বাস, মনিরুজ্জামান, গোলাম কওসার, আ. রাজ্জাক (হাজীপুর), আ. রাজ্জাক (বারইপাড়া) এবং ফরিদপুরের গোলাম আকবর।
[৪৩৫] সংকলন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত