কলসকাটি গণহত্যা, বরিশাল
পাকবাহিনী ২৮ মে ক্যাপ্টেন হানিফের নেতৃত্বে বরিশালের হিন্দু প্রধান এলাকা কলসকাটি আক্রমণ করে। ১০০ পাকসেনা দুটি লঞ্চে করে এসে কলসকাটি ও পার্শ্ববর্তী গ্রাম ঘিরে ফেলে। দালালরা সংবাদ দিয়েছিল যে, জেলার অনেক হিন্দু কলসকাটি জমিদার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। পাকসরকারের ঘোষিত নীতি ছিল আওয়ামী লীগ, হিন্দু ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা। বিভিন্ন বাড়ি হতে কয়েকশত হিন্দুকে কলসকাটি বন্দরে একত্রিত করা হয়। শুরু হলো পাকসেনাদের হিটলারি হত্যাযজ্ঞ। খয়রাবাদ-ভুলাতলা নদীর পানি লাল হয়ে গেল নিরীহ বাঙালিদের রক্তে। পাক বাহিনী ঐদিন মোট ৮৭ জনকে হত্যা করেছিল। কলসকাটি বি এম একাডেমির ১১ জন কিশোর ছাত্রকে হত্যা করে তুলাতলা নদীতে ফেলে দেয়। বরিশালের প্রখ্যাত উকিল শ্যামাকান্ত বন্দোপাধ্যায় ও তাঁর ভাই বরিশাল মহিলা কলেজের কর্মচারী রমনীকান্ত বন্দোপাধ্যায় কলসকাটিতে আশ্রয় নিয়েছিল। অতি বৃদ্ধ দেখে দুভাইকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু রমণী বাবুর পুত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিদ্যাসাগরকে হত্যা করে। পিতার পুত্রের প্রাণ ভিক্ষার জবাবে ক্যাপ্টেন হামিদ বলল he is a graduate, he can not be spared. প্রত্যেক দিন পাকবাহিনী গানবোট, লঞ্চ ও স্পিডবোটে গ্রাম আক্রমণ করে এবং ৩০,০০০ লোককে হত্যা করে। অনেককে তারা বন্দি করে নিয়ে আসত এবং সাগরদী খালের তীরে হত্যা করে ফেলে দিত।
[১৩৫] সিরাজউদ্দীন আহমেদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত