You dont have javascript enabled! Please enable it!

কলিরকোনা গ্রাম গণহত্যা, সিলেট

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দ্বিতীয়বার পৃথ্বিমপাশা আসার পর স্থায়ী আস্তানা প্রতিষ্ঠা করে। এবারে দালালদের মাধ্যমে প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ী তারা গ্রামে গ্রামে হানা দিয়ে লোকজনকে ধরে এনে হত্যা করতে থাকে। তাঁদের পৃথ্বিমপাশা ক্যাম্প থেকে মাত্র মাইল তিনেক দূরে কলিরকোনা গ্রাম। এ গ্রামের একজন স্থানীয় নেতা ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে বীর বিক্রমে তিনি যুদ্ধ করে চলেন। এই অপরাধে একদিন পাকিস্তানি হায়েনারা হাজির হয় কলিরকোনা গ্রামে। সোজা প্রবেশ করে তারা আব্দুল গফুরের বাড়িতে। তাকে না পেয়ে বন্দি করে বাড়িতে অবস্থানকারী আব্দুল গফুরের বৃদ্ধ পিতা মকরম উল্লাকে। শুধু বাবা নয়, তাঁর চাচা আইন উদ্দিনকেও বন্দি করে। এবারে অন্যরা পালাতে থাকে বাড়ি ছেড়ে। পলায়নপর অবস্থায় পাকড়াও করে তারা চাচাত ভাই আব্দুস সাত্তারকে। শুধু তাই নয়, আব্দুল গফুরের ভগ্নিপতি মকদ্দছ আলীও বন্দি হন তাঁদের হাতে।
চারজন বন্দিকে নিয়ে আসা হয় পৃথ্বিমপাশার সেই বধ্যভূমি পদ্মদিঘির পশ্চিম পাড়ে। এখানে খাদ্যগুদাম সংলগ্ন জায়গায় হত্যা করা হতো বিভিন্ন গ্রাম থেকে ধরে আনা লোকজনকে। কলিরকোনা থেকে ধরে আনা নিরস্ত্র এই চারজনকেও নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। তারপর তাঁদের হত্যা করা হয় বুলেটের আঘাতে। এঁদের মৃতদেহগুলোও পাওয়া যায়নি। জয়পাশার আছলিমকে সদপাশায় হত্যা করা হয়। চায়ের দোকানের কর্মচারী ক্ষিতিশকে হত্যা করে তারা পদ্মদিঘির পাড়ে এনে।
এর আগে প্রথম দিন আলীনগর বি.ও.পি থেকে ধরে নিয়ে আসে পাকবাহিনী এই অঞ্চলের আবুল মিয়া ও তাঁর ভাই রেহান মিয়াকে। তাদেরসহ অন্য আরো দুজনকে ফানাইয়ের সেতুর কাছে নদীতে নামিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে তাঁদের তিনজনের লাশ একত্র করে ফানাই তীরে মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল।
[৪৬] তাজুল মোহাম্মদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!