You dont have javascript enabled! Please enable it!

কক্সবাজার গণকবর ও বধ্যভূমি, কক্সবাজার

কক্সবাজারে রয়েছে গণকবর ও বহদ্যভুমি। কক্সবাজার সমুদ্রতীর কলাতলী, বাহারছড়া এবং কক্সবাজার রেস্ট হাউসের সামনে তিনটি গণকবর থেকে পাঁচ শ’র বেশি লাশ উদ্ধার করা হয়। কক্সবাজার এক নম্বর এবং দুই নম্বর মোটেলের সামনেও গণকবর আবিষ্কৃত হয়। এখান থেকেও বেশ কিছু নরকঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে।
রেস্ট হাউসের সামনের গণকবর থেকে যেসব লাশ উদ্ধার করা হয়-তার অর্ধেক লাশই ছিল মহিলার। এসব লাশের মাথার খুলিতে জড়ানো ছিল লম্বা চুল আর পরনের কাপড়। ধারণা করা হয়, পাকিস্তানিরা এসব হতভাগী মহিলাকে রেস্ট হাউসে ধরে নিয়ে পাশবিক অত্যাচারের পর এসব স্থানে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়েছে। ১৯৭২-এ ‘দৈনিক বাংলা’ প্রতিনিধি উল্লেখ করেছেন:
রেস্ট হাউসের স্টোর রুমে সাতটি শুকিয়ে যাওয়া লাশ পাওয়া গেছে। দুটো লাশকে গলাকাটা অবস্থায় দেখা গেছে। এঁদের হয়তো জবাই করা হয়েছিল। এই স্টোর রুমের মেঝেতে এখনো শুকনো রক্ত সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে। রেস্ট হাউসের সামনের কূপে এগারোটা নরকঙ্কাল আবিষ্কৃত হয়েছে। টেকনাফের সেনানিবাসের সামনের কবরে ৭৭টি নরকঙ্কাল পাওয়া গেছে। এছাড়া তাকিয়াতেও পাইকারি কবর আবিষ্কৃত হয়েছে।
১৯৯৩ সালে ‘সংবাদ’ প্রতিনিধি প্রিয়তোষ পিন্টু লিখেছেন:
‘কক্সবাজার সি বিচ রেস্ট হাউস খোলা হয় কেন্দ্রীয় নির্যাতন কেন্দ্র ও তাঁর সম্মুখে সমুদ্র সৈকতে একটি বধ্যভূমির সৃষ্টি করা হয়। ঐ নির্যাতন কেন্দ্রে শত শত নারী-পুরুষকে এনে অমানুষিক নির্যাতন করে বধ্যভূমিতে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হতো। নারীদের ধর্ষনের পর বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারা হতো। এছাড়া জেলার অন্যান্য স্থানেও কয়েকটি বধ্যভূমি করা হয়েছিল। এসব কাজে সার্বক্ষনিকভাবে পাকসেয়ান্দের দেশীয় দোসররা সহায়তা করে যাচ্ছিল। ৮ মাসে পাকসেনা ও তাঁদের দোসরদের হতে কক্সবাজার জেলার শতাধিক নারী-পুরুষ নিহত হয়েছেন। জেলার মহেশখালী থানায় বেশি সংখ্যক লোক নিহত হন।
[১৩৭] সুকুমার বিশ্বাস

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!