আশুগঞ্জ সাইলো বধ্যভূমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আশুগঞ্জ সাইলো ছিল পাক হানাদার বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতর। এতদঞ্চলে এটিই ছিল পাকহানাদার বাহিনীর সবচেয়ে বড় টর্চার ক্যাম্প। ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মহিলা ও পুরুষকে সাইলোতে ধরে এনে নির্যাতন করা হতো। পাক হানাদার বাহিনী বড় বড় অফিসারের মনোরঞ্জনের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সুন্দরী মহিলাদের আশুগঞ্জ সাইলোতে নিয়ে আসত। পাক হানাদারদের ভোগের পর এঁরা শেয়াল-কুকুরের কিংবা মেঘনা নদীর মাছের খাবারে পরিণত হতো। রাজাকাররা একালার বিত্তশালী লোকদের সাইলোতে আটক করে নির্যাতন চালিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করত। সাইলর পশ্চিম পাশের সীমানা প্রাচীরের পাশে শত শত লোককে হত্যা করে লাশ গণকবর কিংবা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হতো। দেশ স্বাধীনের পর সাইলো থেকে ক্ষতবিক্ষত অনেক মহিলাকে উদ্ধার করা হয়। সাইলোর পশ্চিমে তখনো অসংখ্য লাশ ও নরকঙ্কাল পাওয়া যায়। সে বীভৎসতাঁর কথা মনে হলে এখনো এলাকাবাসী শিউরে ওঠেন। আশুগঞ্জ সাইলোর পাশে দাঁড়িয়ে স্বজনহারা অনেককে এখনো নীরবে চোখের জন ফেলতে দেখা যায়।
[১১৯] শাহজাহান আলম সাজু
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত