অমরখানা গনহত্যা, পঞ্চগড়
অমরখানা পাক ঘাঁটির আশেপাশে বহু লোক নির্যাতনের শিকার হয়। অমরখানার পশ্চিম দিকে চাওয়াই নদীর তীর ঘেঁষে গ্রামগুলো বারবার আক্রান্ত হয়। পাকসেনা ও তাঁদের দোসরদের দ্বারা জুলাই মাসের দিকে চোখ ও হাত বেঁধে ১৬ জন মানুষকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় অমরখানা ক্যাম্পে। সৈন্যরা এদেশীয় দোসরদের সহায়তায় লইপাড়া, জাবেরীদুয়ার, নছুয়াপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া প্রভৃতি গ্রামে ঢুকে নিয়মিত লুটতরাজ ও জোরপূর্বক জিনিসপত্র নিয়ে আসে। লইপাড়ায় একদিন পাকবাহিনীর শেলের আঘাতে মারা যায় অনেকে। বখশিগঞ্জ এলাকায় নিহত হয় দুজন। ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে আগস্ট মাসে ১১ জন পাকসেনা রেয়াজুদ্দিন মুনশীর বাড়িতে উপস্থিত হয়। তাঁদের মধ্যে একজন সৈনিক ঘরের ভেতর প্রবেশ করে তাঁর স্ত্রী সালেহা বেগমের শীলতাহানির চেষ্টা চালায়। এ সময় ঘরের ভেতর অবস্থানকারী তাঁর স্বামী দা দিয়ে পাক সৈনিকটিকে আঘাতের পর আঘাত করে জর্জরিত করে ফেলে। সৈনিকটি কোনো রকমে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘর থেকে বের হয়। তখন তাঁর অন্যান্য সঙ্গী রেয়াজুদ্দিন মুনশীকে উপর্যুপুরি কয়েকবার গুলি করে হত্যা করে। তাঁর স্ত্রী সালেহা বেগমের পেটে বেয়োনেট চার্জ করে হত্যা করা হয়। পঞ্চগঞ্জের লাঙ্গলগাও এলাকায় পাকিস্তানি শেলের আঘাতে একই পরিবারের একটি শিশুসহ নিহত হয় চারজন মহিলা।
[৫২] নাজমুল হক
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত