You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.01 | আজমেরু গণহত্যা | মৌলভিবাজার - সংগ্রামের নোটবুক

আজমেরু গণহত্যা, মৌলভিবাজার

১মে ভোজবলে ছয়জনকে নির্বিচারে হত্যার পর পাকিস্তানি হায়েনার দল প্রবেশ করে আজমেরু গ্রামে। কিন্তু বাউরবাগ, চন্দপুর ও ভোজবলে গণহত্যা করার সময়ই পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোয় সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষজনও ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় হাওড় প্রান্তরের দিকে। আজমেরু গ্রামের লোকজনও বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে; কিন্তু অশীতিপর বৃদ্ধ রুগ্ন পিয়ারী মোহন দেবনাথ পালাতে পারেননি। চলাফেরার ক্ষমতা নেই তাঁর। বিছানায় শয্যাশায়ী তিনি অনেক দিন থেকেই, কিন্তু রেহাই পেলেন না তিনিও। বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে গেল তাঁর বুক। প্রাণ দিলেন পাকবাহিনীর হাতে।
এ গ্রামের আর এক নিরীহ ব্যক্তি গোপেশ চন্দ্র দাশ। পালাতে পারেননি তিনিও। পাকবাহিনীর আগমন সংবাদে ভীত হয়ে তাই ত্তিনি নিজের ঘরের ভেতর আত্মগোপন করেন। কিন্তু স্থানীয় দালালদের সন্দেহ হতেই তাঁর ঘর তন্ন তন্ন করে খুজে শেষ পর্যন্ত ধরা হয় গোপেশ দাশকে। তিনি একা নন। তাঁর সাতেহ ধরা পড়েন পরিবারের আরো তিনজন। তারা হলেন-গোপেশ দাশের স্ত্রী মানদা দাশ, পুত্র বারীন্দ্র দাশ এবং তাঁর বৃদ্ধা শাশুড়ি। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় ভোজবলে। সেই এওকই বধ্যভূমিতে। নিয়ে গিয়ে হত্যা করে তারা এই চারজন নিরীহ গ্রামবাসীকে। তাঁদের মৃতদেহগুলো পড়ে থাকে অন্যান্য মৃতদেহের সাথে।
[৩৪] তাজুল মোহাম্মদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত