বিপ্লবী বাংলাদেশ
২৬শে ডিসেম্বর ১৯৭১
একটি প্রস্তাব
সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানের জনগণের সাথে ভারতের কোন শত্রুতা নেই বলে যথার্থই মন্তব্য করেছেন। পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণও বাংলাদেশের জনগণের মতই শোষিত নিপীড়িত। তারাও পাকিস্তানী সামরিক চক্রের শাসন থেকে মুক্তি পেতে চায়। পশ্চিম পাকিস্তানের সীমান্ত প্রদেশ অর্থাৎ সারহাদের পাঠান জাতি বহুদিন ধরে পাখতুনিস্তান দাবী করে চলেছে। সিন্ধু প্রদেশের সিন্ধি জাতি “জয়ে সিন্ধ” ধ্বনি দিয়ে মুখর করেছে তাদের রাজনৈতিক জীবন ধারা। বালুচিস্তানের বালুচরাও চাইছে তাদের নিজস্ব জাতীয় জীবন স্বাধীন ভাবে গড়ে তুলতে। পাঞ্জাবের পাঞ্জাবী জাতি আর শৃঙ্খলিত জীবন যাপন করতে নিশ্চয়ই চাইছেনা।
বাংলাদেশের জয়বাংলার সার্থক রূপায়ন ঘটেছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্মের মাধ্যমে। ভারতের সক্রিয় সাহায্য সমর্থন ও ভূমিকা বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির পথ প্রশস্ত করেছে স্বাধীনতা অর্জন ত্বরান্বিত করেছে।
সাম্প্রতিক পাক-ভারত যুদ্ধে পশ্চিম রণাঙ্গনে সিন্ধু প্রদেশের এক বিশাল অংশ ভারতের দখলে রয়েছে। সেখানে বর্তমানে বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। ভারত বার বার ঘোষণা করেছে ভারতের পররাজ্য লিপ্সা নেই। সে ক্ষেত্রে সিন্ধু প্রদেশের দখলিকৃত এলাকায় ভারত সরকারাধীন বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থা চালু না করে সিন্ধি জাতীয়তাবাদীদের হাতে ঐ এলাকা ছেড়ে দিয়ে তাদের সক্রিয় সাহায্য ও সমর্থন জুগিয়ে তাদের মাতৃভূমি সিন্ধু মুক্ত ও স্বাধীন করার পথ প্রশস্ত করা কি অধিকতর বাঞ্ছনীয় নয়?
সূত্র: বিপ্লবী বাংলাদেশ ফাইল