You dont have javascript enabled! Please enable it!

বিপ্লবী বাংলাদেশ
১২ই ডিসেম্বর ১৯৭১

সুরলোকে বেজে ওঠে শংখ, নরলোকে বাজে জয়ডঙ্ক
এলো মহাজনমের লগ্ন—
ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিল

৬ই ডিসেম্বর। আজ পৃথিবীর নবতম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ স্বীকৃতি পেলো। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী গান্ধী আজ ভারতীয় সংসদে এক ঐতিহাসিক ঘোষণায় জানালেন যে ভারত সরকার বাংলাদেশকে স্বাধীন, সার্বভৌম, পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করেছে।
এই ঘোষণায় তিনি আরও বলেন যে, বাংলাদেশ সরকারের নাম হবে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’। এই নতুন সরকার তাঁদের নীতি ঘোষণা করতে গিয়ে জানিয়েছেন যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হবে গণতান্ত্রিক সমাজবাদ ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ এক সমাজব্যবস্থার ‍ওপর। সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশিকতা—এই দুইয়ের বিরোধী বাংলাদেশ অপর রাষ্ট্রগুলির সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী হবে এবং গোষ্ঠী নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করবে।
শ্রীমতী গান্ধী তাঁর বক্তৃতায় পুনরায় বাংলাদেশকে সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন। তিনি আশ্বাস দেন, বাংলাদেশ পুনর্গঠনের কাজে ভারত যথাসম্ভব সাহায্য করতে প্রস্তুত।
ভারতের স্বীকৃতির পরদিনই, ৭ই ডিসেম্বর, ভুটানও বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিল। ভুটানের রাজা বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের কাছে একটি বার্তা পাঠান। তাতে ছিল, ‘আপনাকে ও বাংলাদেশ সরকারকে আনন্দের সঙ্গে জানানো হচ্ছে যে ভুটান বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকার করল’।
এই স্বীকৃত দুটির ফল হলো সুদূর প্রসারী। বিশ্বের মানচিত্রে পূর্ব-পাকিস্তান নামটি মুছে গেল। ভবিষ্যতে সেখানে স্বাধীনতার স্বর্ণপত্রের উপর শহীদদের রক্তাক্ষরে লেখা হবে ‘বাংলাদেশ’। এ বাংলা ‘সোনার বাংলা’, এ বাংলা ‘স্বাধীন বাংলা’, এ বাংলা ‘বাঙালীর বাংলা’।

সূত্র: বিপ্লবী বাংলাদেশ ফাইল

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!