বিপ্লবী বাংলাদেশ
৫ই ডিসেম্বর ১৯৭১
বিচ্ছু-বাহিনী
মুক্তি বাহিনীর বেশ কিছু সংখ্যক সদস্যের বয়েস ৮ বছর থেকে ১২ বছর। এদেরকে বলা হয় ‘বিচ্ছু’। সম্ভবতঃ এই বিচ্ছুরাই মুক্তিবাহিনীর সবচেয়ে সাহসী অংশ। তার প্রমাণ রয়েছে ভূরি ভূরি। একটা ঘটনার উল্লেখ করছি :-পাক অন্তর্ঘাতদের বসানো মাইনগুলো মাইন ডিটেক্টর ছাড়াই খালিহাতে তুলে ফেলেছিল এই বিচ্ছুরা!
সবরকম অস্ত্র ব্যবহারে পারদর্শী, অকুতোভয়, স্বাধীন-চেতা এই বিচ্ছুরাই হবে বাংলার আগামী দিনের ইতিহাসের স্রষ্টা ও নায়ক।
সিলেট রণাঙ্গন :
তিলকপুরের নিকটবর্তী পাক দখলদার বাহিনীর ঘাঁটির উপর অসমসাহসী মুক্তিযোদ্ধারা প্রবল আক্রমণ চালিয়ে ২৫ জন খানসেনাকে খতম করে। বড়নি অঞ্চলে অপর এক আক্রমণে মুক্তি ফৌজ ১৩ জন হানাদার সৈন্যকে খতম করেছে। গৌরীপুরের নিকটে পাক হানাদারদের একটা ঘাঁটি মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করে। এই আক্রমণে ১২ জন পাক সেনা ও ৫ জন রাজাকার নিহত হয়। এ ছাড়া দুর্গাপুর, মজিদিয়া, বকসিগঞ্জ প্রভৃতি অঞ্চলে শত্রু সৈন্যদের ঘাঁটি আক্রমণ করে ৪০ জন খান সেনাকে খতম এবং ১২ জন রাজাকারকে আটক করে।
সিলেট জেলার ছোটমিল এলাকার মুক্তিবাহিনী দখল করে নিয়েছে। জয়ন্তীপুর অঞ্চলে অপর এক আক্রমণে অসংখ্য পাকিস্তানী সৈন্য খতম হয়েছে এবং এই অঞ্চলে মুক্তিফৌজ প্রায় সম্পূর্ণ দখল করে নিতে সমর্থ হয়েছে। সিলেট জেলার শহরের উপকন্ঠে প্রবল সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। কানাইঘাট মুক্তিবাহিনী দখল করে নিয়েছে। বদিরটেকা এলাকায় মুক্তি ফৌজ অপর এক আক্রমণে ৩৪ জন দখলদার পাক-সেনাকে খতম করেছে। ময়মনসিংহ জেলার মধুপুরে পাক আক্রমণকারীদের ৪৯ জন সৈন্য মুক্তি বাহিনীর আক্রমণে নিহত হয়েছে।
সূত্র: বিপ্লবী বাংলাদেশ ফাইল