You dont have javascript enabled! Please enable it!

বিপ্লবী বাংলাদেশ
২৮ নভেম্বর ১৯৭১

এ জয় মানবতার জয়
যশোর ক্যান্টনমেন্ট অবরুদ্ধ

২৬ নভেম্বর; বাংলাদেশ। মুক্তিবাহিনীর অপ্রতিহত অগ্রসর বিদ্যুৎগতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের প্রতিটি রণাঙ্গনে মুক্তি যোদ্ধারা আজ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। মাত্র এক-সপ্তাহের সাফল্যে হানাদার বাহিনী এরি মধ্যে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে।
মুক্তি যোদ্ধাদের এতদিন লক্ষ্য ছিল থানা পর্যায়ে আক্রমণ চালান। বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি থানাই মুক্তি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসায় এখন সদর দখলের চেষ্টায় বিপ্লবী মুক্তি সেনারা দুর্বার গতিতে শহরের দিকে এগিয়ে চলেছে। ইতিমধ্যেই চট্টগ্রাম, ঢাকা, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, কুমিল্লা, সিলেট শহরের অনেকগুলো স্থান নিজেদের দখলে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
এখন মুক্তি যোদ্ধাদের মূল লক্ষ্য ক্যান্টনমেন্টগুলো। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে অসম সাহসী মুক্তি যোদ্ধারা বাংলাদেশের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ যশোর ক্যান্টনমেন্ট অবরুদ্ধ করে ক্যান্টনমেন্টের উপরে সমানে গোলা বর্ষণ করে চলেছেন। যশোরের অসামরিক বিমান ঘাঁটি এরিই মধ্যে বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ক্যান্টনমেন্টের বহু ক্ষতি সাধন হয়েছে।
যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে হানাদার বাহিনী পালাতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে। আরো জানা গেছে ইতিমধ্যেই যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ভারী ধরণের অস্ত্র-শস্ত্র ও উল্লেখযোগ্য জিনিষপত্র বরিশালে পাঠাতে শুরু করেছে।
মুক্তি বাহিনীর এই গুরুত্বপূর্ণ আক্রমণকে ভারতের আক্রমণ বলে চিহ্নিত করবার প্রচেষ্টায় বার বার পাক বেতার থেকে মিথ্যা প্রচার করে চলেছে। কিন্তু জঙ্গী শাহী বাংলাদেশের মানুষকে মিথ্যা বলে আর ১৯৬৫ সনের মত ধোঁকা দিতে পারবেনা। কেননা বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণ উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, শক্তিশালী ভারত যদি যশোর ক্যান্টনমেন্ট দখলের চেষ্টা করতেন তাহলে মুহূর্ত মধ্যেই ক্যান্টনমেন্ট দখল করে নিতে পারতেন, তার জন্য সাতদিন ধরে যুদ্ধ করতে হত না ভারতের সৈন্য বাহিনীর।

সূত্র: বিপ্লবী বাংলাদেশ ফাইল

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!