বিপ্লবী বাংলাদেশ
২১ নভেম্বর ১৯৭১
এবারের ঈদ
ঈদ এল। ত্রিশ দিনের কৃচ্ছ্রতার শেষে ত্যাগ ও তিতিক্ষার বাণী নিয়ে ঈদ এল। বাংলাদেশের আকাশে একটা হাহাকার যেন নতুন আশার আলোকে বাঙ্ঘময় হোল! মাতা-বোন-কন্যা পিতার জন্য যেন একটা মর্মান্তিক আর্ত্তনাদ আকাশ বাতাস মথিত করে ছড়িয়ে গেল। ঊর্ধ্ববাহু মুয়াজ্জিনের কন্ঠে যেন একটা আরজি খোদার আরস ভেদ করে রেণু রেণু হয়ে ছড়িয়ে গেল।
বাংলাদেশের পথে প্রান্তরে গ্রাম গ্রামান্তরের বাঙ্কারে এক একটি তরুণের শক্তবাহু কঠিন হোল। স্ফীত হোল, প্রতিজ্ঞায় শাণিত হোল প্রতিশোধের স্পৃহা। খুশীর ঈদ এবার বাংলাদেশে এল মাতৃহারা পুত্রের কান্নায়, পুত্রহারা পিতার আর্তনাদে। গভীর রাতে মাতা অশ্রুসিক্ত করল বক্ষ। প্রতিশোধের শপথে এক সময় মাতাপিতায় পুত্র-কন্যার কন্ঠ মুয়াজ্জিনের কন্ঠের সাথে এক হয়ে উচ্চারণ করল “খোদা, অত্যাচারের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, আমাদের প্রতিরোধের শক্তিকে অপ্রতিহত কর। হত্যাকারীর বিরুদ্ধে আমাদের অস্ত্রকে ক্ষুরধার কর। চন্ডনীতির বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিশোধ স্পৃহাকে নির্মম কর।”
সূত্র: বিপ্লবী বাংলাদেশ ফাইল