বিপ্লবী বাংলাদেশ
৩১ অক্টোবর ১৯৭১
৬টি এম.এম.জি দখল ও ৭০ জন খানসেনা নিহত
ঢাকা-কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম রণাঙ্গন :
১৬ থেকে ১৮ই অক্টোবর কুমিল্লার সালদা নদীতে ৩৩ নং পাক বেলুচ রেজিমেন্টের সাথে মুক্তি যোদ্ধাদের এক মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে প্রায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত বেলুচ রেজিমেন্টের ৭০ জন হানাদার সেনা নিহত এবং অসংখ্য সেনা আহত হয়। মুক্তি বাহিনী প্রচুর গোলাবারুদ, ৬টি এম-এম-জি ও ১৮টি হানাদার বাহিনীর মৃত দেহ ছিনিয়ে রাখেন এবং সেকেন্ড লেফটানেন্ট পারফেজ সহ অপর দুজন শত্রু সেনারেক কারারুদ্ধ করেন।
সেতু ও রেললাইন বিধ্বস্ত
রংপুর-দিনাজপুর-রাজশাহী রণাঙ্গন :
গত ১৮ই অক্টোবর বিরলা অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর অসমসাহসী যোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর উপর এক প্রবল আক্রমণ পরিচালনা করেন। এই আক্রমণে হানাদার বাহিনীর ১৩ জন শত্রু সেনা খতম হয় এবং মুক্তিবাহিনী ২০টি রাইফেল হস্তগত করেন।
মুক্তিবাহিনীর বীর সেনানীদের এক অতর্কিত আক্রমণে গত ১৬ই অক্টোবর খালপার এলাকায় পাকবাহিনীর একটি ঘাঁটি বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই আক্রমণে ৭ জন খান সেনা নিহত হয় এবং বেশ কিছুসংখ্যক গুরুতর ভাবে আহত হয়। উক্ত এলাকা থেকে হানাদার বাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
গত ১৭ই অক্টোবর মুক্তিবাহিনীর প্রবল ঝটিকা আক্রমণে ফুটকিবাড়ি সড়কের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হয় এবং রেললাইনের ক্ষতিসাধন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে।
১২ই অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা মেলবাড়ি এলাকায় পাহারারত পাক হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমণ চালিয়ে ৫ জন শত্রুসৈন্য খতম এবং কয়েক জনকে গুরুতররূপে আহত হয়।
তিনটি লঞ্চ দখল
ময়মনসিংহ-শ্রীহট্ট ও মৌলভী বাজার রণাঙ্গন :
১৬ই অক্টোবর বেতারগাঁও অঞ্চলে মালবোঝাই তিনটি লঞ্চ মুক্তি বাহিনী দখল করেন। ১৫ই অক্টোবর ময়মনসিংহের বিজয়পুর ও বিরিসিরি সড়কে পাক টহলদার বাহিনীকে মুক্তি যোদ্ধারা আক্রমণ করেন এবং ৪ জন শত্রু সেনা খতম হয়।
১৭ই অক্টোবর মুক্তি যোদ্ধারা যামালপুর ও জগন্নাথ ঘাট রেল সেতুটি বিধ্বস্ত করেন। এবং বকশিগঞ্জ ও কামালপুরের মধ্যকার টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
তেলখানি এলাকায় ২০ অক্টোবর মুক্তি যোদ্ধাদের মর্টার আক্রমণে ৩০ জন পাক শত্রু সেনা খতম হয়। মুক্তি বাহিনী এ অঞ্চলে পাক সেনাদের সব বাঙ্কারগুলো বিনষ্ট করেন। একই দিনে সারি নদী অতিক্রম রত জলযান মুক্তি যোদ্ধারা ধ্বংস করেন এবং ১০ জন শত্রু সেনা এখানে খতম হয়।
সূত্র: বিপ্লবী বাংলাদেশ ফাইল